পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/২৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

মুরশিদাবাদ হইয়া দেখেন—একটি বাবু অপর একটি বাবুর সহিত গল্প করিতে করিতে আসিতেছেন, বাবুট কহিতেছেন, “সংস্কৃত ভাষার মত ভাষা আর দ্বিতীয় নাই। ইহার এক একখানি গ্রন্থে এত মধুর রস ও মধুর ভাব যে, শত শত বার পাঠ করিয়াও তৃপ্তিলাভ হয় না ।” ইহার পর দেবগণ খাগড়ার ঘাটে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তাহারা দেখেন—ঘাটে অনেকগুলি মুসলমান ও মুসলমান রমণী স্নান করিতেছেন। স্ত্রীলোকদিগের মধ্যে কেহ কেহ গঙ্গামৃত্তিক দিয়া চুল পরিষ্কার করিতেছেন, কেহ কেহ তৃণাদি দ্বারা গাত্ৰালঙ্কারগুলি মাজিতেছেন। ধনী লোকের বাড়ীর বাকীরা আসিয়া বাকে কবিয়া পানীয় জল তুলিয়া লইয়া যাইতেছে। এবং পাচক ব্রাহ্মণের দলে দলে আসিয়া পাত্রের কালী ধৌত করিতেছে। তাহারা দেখিতে দেখিতে নগরমধ্যে প্রবেশ করিয়া একটি বাড়ীতে বাসা করিলেন । সকলে দেখেন—নগরের অধিকাংশ অট্টালিকার আর পূর্বের ন্যায় ঐ-সৌন্দৰ্য্য নাই । কোন বাটীর গাত্রে প্রকাও প্রকাণ্ড অশ্বখাদি বৃক্ষ সকল শাখা প্রশাখা বাহির করিয়া বিরাজ করিতেছে। তাহীদের শিকড়গুলি অট্টালিকার অর্ধেক আন্দাজ প্রাচীর দখল করিয়া ফেলিয়াছে, এবং রীতিমত প্রবেশ পথ না পাওয়ায় কোন কোন স্থান ফাটাইয়া তন্মধ্যে বলপূর্বক প্রবেশ করিবার চেষ্টা পাইতেছে। সহরস্থ পুষ্করিণীগুলির অবস্থা তদ্রুপ। জল যেমন অপরিষ্কার, তেমনি তীর সকল বনজঙ্গলে আবৃত। বরুণ। দেখুন পিতামহ, যখন মুরশিদাবাদের অবস্থা ভাল ছিল, তখন এই সমস্ত অট্টালিকা ও পুষ্করিণীর সৌন্দর্ঘ্যের পরিসীমা ছিল না। লক্ষ্মী মুরশিদাবাদ পরিত্যাগ করিয়া যেমন প্রস্থান করিলেন, অমনি নগরের সৌন্দর্ঘ্যও দিন দিন হ্রাস পাইতে আরম্ভ হইল। বোধ হয় আর কিছু দিন পরে মুরশিদাবাদ বনজঙ্গলে পরিপূর্ণ হইয়া হিংস্র জন্তুর আবাসভূমি হইবে। ব্ৰহ্মা । কলিতে নগর বন এবং বন নগর হইবে, ইহা কি জান না ? বরণ । আজ্ঞে, জানাজানি কি ! জামালপুর ও সাহেবগঞ্জ এ বিষয়ের সাক্ষ্য দিতেছে ! আহারাদি করিয়া দেবতারা খাগড়ার বাজারে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। তাহারা দেখেন—অসংখ্য দোকানে নানাপ্রকার দ্রব্যাদি বিক্রয় হইতেছে। বরুণ কহিলেন, “খাগড়ার বাসন বড় বিখ্যাত, এখানকার পানের ডিপে, জল খাবার মাস ও ঘটর যেমন সুন্দর গঠন, তেমনি উৎকৃষ্ট রৌপ্যের স্থায় বর্ণ। ኟጫዳ