ত্ৰিবেণী “নড়ে চড়ে খসে না " বলিয়া, নারায়ণ হাঞ্চ করিতে করিতে কত টানাটানি আরম্ভ করিলেন, কিন্তু কিছুতেই খুলিতে সমর্থ হইলেন না। দেবরাজ প্রভৃতি সকলেই এক একবার চেষ্টা করিয়া দেখিলেন ; সৰ্ব্বশেষে উপও অনেক টানাটানি করিল। ইন্দ্র । বরুণ। দরফাগাজি কি ? বরুণ । দরাফ খ" নামক এক মুসলমান গঙ্গাবাসী হইয়। এই স্থানে গঙ্গার আরাধনা করেন । র্তাহারই নাম অনুসারে স্থানটিকে দরফাগাজি কহে । ব্ৰন্ধা । বরুণ । দরাফ খণ মুসলমান হইয়া কি জন্য গঙ্গাবাসী হইলেন ? বরুণ। কথিত আছে—দরাফ খণ একজন ধনাঢ্য মুসলমান ছিলেন। একদিন সন্ধ্যার পর স্থানান্তর হইতে যখন তিনি নিমন্ত্রণ গাইয়া প্রত্যাগমন করিতেছিলেন, পথিমধ্যে অকস্মাৎ অত্যন্ত বৃষ্টি হইতে আরম্ভ হইল। র্তাহার সঙ্গিগণ র্তাহাকে পরিত্যাগ করিয়া কে কোথায় পলায়ন করিল—তিনি কিছুমাত্র স্থির করিতে পারিলেন না। সুতরাং বৃষ্টি হইতে আত্মরক্ষার জন্ত অগত্য পৰিপার্শ্বশ্ব শ্মশানভূমির সন্নিকটে একটা বটবৃক্ষের তলে তিনি আশ্ৰয় লইলেন এবং বৃক্ষোপরিস্থ ভূত ও প্রেতিনীর কথোপকথন শুনিতে লাগিলেন। প্রেতিনী কহিতেছে “ভাই ! আমার কি বিবাহ হইবে না, চিরদিনই অবিবাহিত থাকিব ?” ভূত কহিতেছে “দিদি । অমুক গ্রামে দরাফ খাঁর ভৃত্যকে আগামী কল্য সেই বাড়ীর বুধিয়া গাই শৃঙ্গাঘাতে হত্য করিবে, সে মরিয়া ভূত হইবে। সেই ভূতের সহিত তোমার বিবাহ দিব।” দরাফর্থ এই কথা শুনিয়া বাড়ীতে প্রত্যাগমন করিলেন ; কিন্তু কাহারও নিকট কোন কথা প্রকাশ করিলেন না। প্রাতে উঠিয়া ভৃত্যকে একটা গৃহমধ্যে বদ্ধ করিয়া দ্বারে তালা লাগাইয়া কাৰ্য্যবশতঃ স্থানাস্তরে প্রস্থান করিলেন । যাইবার সময় তিনি চাবিটী ফেলিয়া গেলেন ও তৎপত্নী তাহ কুড়াইয়া রাখিলেন। এদিকে বুধিয়া দড় ছিড়িয়া অত্যন্ত উপত্ৰৰ আরম্ভ করিল। সে যাহাকে দেখে, “ফোস” “ফোস" শব্দে ছটিয়া তাহার পশ্চাৎ পশ্চাৎ যাইতে লাগিল । এক একবার নক্ষত্ৰবেগে বাটীর বাহির হইয়া গঙ্গাতীরে ঘুরিয়া জাসিতে লাগিল । দয়াফখার পত্নী বেগতিক দেখিয়াগকটকে বাধিবার জন্ত ভৃত্যকে গৃহের বাহির করিয়া দিলেন। হতভাগ্য যেমন বুধিয়াকে বন্ধন করিতে যাইবে, বুধিয়া অমনি চুটিয়া গিয়া শৃঙ্গাঘাতে তাহাকে হত্যা করিল এবং তার পর শাস্ত মূৰ্ত্তিতে নিজস্থানে যাইয়া ধাড়াইল । * * v99)
পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/৩১৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
