পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/৩৮২

দেবগণের মর্ত্যে আগমন তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত হইয়াই দুর্গাচরণকে অবগত কৱাইলেন যে, তিনি অতঃপর আর প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করিয়া অবকাশ পাইবেন না । ইহাতে দুর্গাচরণ শিক্ষকতা পরিত্যাগ করিয়া অনন্তকৰ্ম্মা ও অনন্তমনা হইয়া কেবল চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়নেই মনঃসংযোগ করিলেন । তিনি পাচ বৎসরকাল মেডিকেল কলেজে অধ্যয়ন করিয়া চিকিৎসাশাস্ত্রে বিলক্ষণ ব্যুৎপন্ন হওয়াতে কলেজ পরিত্যাগ করেন। এই সময়ে নিম্নলিখিত ঘটনাট ঘটে—“মেসার্স জাবুডিন স্কিনার এও কোং”র অফিসের মূল্গুদি বাবু নীলকমল বন্দ্যোপাধ্যায় সাংঘাতিক পীড়ায় আক্রাস্ত হইলেন ; চিকিৎসকগণ পীড়া সঙ্কটাপন্ন—আরোগ্য হইবার নহে বলেন । অবশেষে দুর্গাচরণকে আনয়ন করা হইল, তিনি ঔষধের ব্যবস্থাপত্ৰ দিয়া প্রস্থান করিলেন । এই সময় জ্যাক্সন সাহেবকে দেখিতে দেওয়া হয় ; ডাক্তার জ্যাক্সন উহা দেখিয়া বলিলেন “ঠিকই হইয়াছে” এবং ঔষধের গুণে রোগীর বিলক্ষণ উপকার হইয়াছে । তিনি সাতিশয় চমৎকৃত হইলেন এবং দুর্গাচরণের সহিত আলাপ করিয়া তাহাকে “নেটিভ জ্যাক্সন” উপাধি প্রদান করিলেন । এই ঘটনার পর হইতে দুর্গাচরণের সৌভাগ্যস্বৰ্য্য উদয় হইল,—তাহার নাম ও যশ চতুর্দিকে ব্যাপ্ত হুইল । নীলকমল বাবু সম্পূর্ণরূপে আরোগ্যলাভ করিলে তাহার বন্ধু পণ্ডিতপ্রবর বিদ্যাসাগর মহাশয় ও স্বদেশহিতৈষী বাবু রাজেন্দ্রনাথ দত্ত উভয়েই দুর্গাচরণকে ফোট উইলিয়ম কলেজে মাসিক ৮০ টাকা বেতনে খাজাধির কার্য্য গ্রহণ করিতে এবং প্রাতে ও সন্ধ্যাকালে চিকিৎসা ব্যবসা অবলম্বন করিতে পরামর্শ দিলেন । দুর্গাচরণও র্তাহাদিগের পরামর্শমত কিছুকাল কাৰ্য্য করেন। পরে ৩৪ বৎসর বয়সে তিনি চিকিৎসা ব্যবসায়ের উপরই সম্পূর্ণরূপে নির্ভর করিলেন। অতাল্পকালমধ্যেই সৰ্ব্বোৎকৃষ্ট চিকিৎসক বলিয়া সৰ্ব্বত্র পরিচিত হইলেন ; র্তাহার বাট প্রাতে ও বৈকালে সহস্ৰ সহস্ৰ পীড়িত ব্যক্তিদের দ্বারা পরিপূর্ণ হইতে লাগিল। অধিক কি তাহার উপর সকলেরই একপ্রকার দৃঢ় ভক্তি ও বিশ্বাস জন্মিল যে, তিনি রোগীর নিকট আসিলেই লোকে মনে করিত, স্বয়ং ধন্বন্তরি আসিয়াছেন—রোগী নিশ্চয়ই আরোগ্যলাভ করিবে। দৃষ্টিমাত্রেই তাহার রোগনির্ণয়ের অলৌকিক ক্ষমতা ও চিকিৎসাশাস্ত্রে আসাধারণ পারদর্শিতা দেখিয়া তাঁহাকে সকলে দেবামুগুহাত বলিয়া স্বীকার করিত। দশ বৎসরের মধ্যেই তিনি মূনাধিক লক্ষ টাকা উপার্জন করিলেন। Վ3**,