পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/৩৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বালি দেখিতেছি ? লোকের শ্রদ্ধা ভক্তি নাই, মল মূত্র ত্যাগ করিতেছে, শ্লেষ্মাদি জলে নিক্ষেপ করিতেছে ; অতএব তুমি কি স্বখে আর এখানে রহিয়াছ ? দেবি ! তুমি তরঙ্গিণী অগ্রগণ্য হইয়াও কলিকাতায় যে কিছুই করিতে পার নাই দেখিয়া বড় আশ্চৰ্য্যাম্বিত হইলাম। তুমি সমূদয় গুণের আধার ; তজ্জন্তই কি ইংরাজের বহুত স্বীকার করিয়াছ ? তোমার চরণকমল সংসাররূপ মহাসমুদ্রের তরণীস্বরূপ । তোমার কণামাত্র জলস্পর্শ করিলে দেবলোক অপেক্ষ দুর্লভ স্থান লাভ হয় জানিয়াও লোকে অবমাননা করিতেছে, তখন কি মুখে অণর মর্তে আছ ? মা ! আমি তোমার সলিল স্পর্শ করিয়া কাদিতেছি, আর কাদাইও না। আমি সমস্ত পথ তোমাকে দেখতে না পেয়ে কাদিতে কাদিতে আসিতেছি ; যদি দেখা না দাও, আজ তোমার জলে জীবন ত্যাগ করিব । তুমি জান না—আমি কি জন্য এ প্রাচীন বয়সে স্বর্গ ছেড়ে নরকে এসেছি ? ইংরাজরাজ তোমায় এত কি মুখী ক’রেছেন যে, এ বুড়ো বাপকে বিশ্বত হইবে ? জলে ইংরাজের শত শত তরী ভাসিতেছে, তীরে ইংরাজ রাজধানী কলিকাতা শোভা পাইতেছে ; এই স্বখেই কি আমার প্রতি যে স্নেহ মমতা ছিল —বিসর্জন দিয়াছ ? এই মুখেই কি এখানে এত স্থায়িভাবে বিরাজ করিতেছ?” এই সময়ে ভাগীরথী তরঙ্গমালাকে কহিলেন “সখিগণ ! চেয়ে দেখ— তীরে দাড়াইয়া আমার বৃদ্ধ পিতা কাদিতেছেন। চেয়ে দেখ—দেবরাজ, জলাধিপতি এবং যাহার চরণ হইতে আমার উৎপত্তি হয়, সেই দেবদেব নারাযুণ আমার তীরে বিষন্নভাবে দাড়াইয়া আছেন। উহাদের কষ্ট দেখে আজি বড় কষ্ট পেলাম ! যে ভারতের লোকে প্রাতে, মধ্যাহ্নে দেবগণের নামোচ্চারণ না করিয়া কোন কাজ করেন না।—আজ সেই ভারতে দেবগণের এ ভাবে আগমন দেখিয়া আমার যে বুক ফেটে যাচ্চে ! সখি, আমি দুঃখে কষ্টে যে এত অস্থির ; কিন্তু আজ ইহাদের কষ্ট দেখিয়া আমার যন্ত্রণা আরও বৃদ্ধি হইতেছে। সখি, ভারতেশ্বরের কোন পুত্র, কি কোন গবর্ণর আজ যদি আসিতেন কি যাইতেন—কি সমারোহ হইত। কলিকাতার যত বড় বড় লোক মহাসমারোহে নামাইতে আসিতেন । স্কুলের ছেলেগুলো নিশান হাতে আসিয়া উপস্থিত হইত। দোকানী পশারীরা দোকান বন্ধ করিয়া দেখিতে আসিত। আর এতক্ষণ গুড়ুম গুডুম শৰে তোপ পড়িবার ধুম লাগিত। যাক—কলির কুলাঙ্গারের যা করে করুক, তোমরা আর অযত্ন করিও না । ত্বরায় তোমরা সকলে পদ প্রক্ষালন করিয়া দাও । 8 as