পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/৪৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবগণের মর্ত্যে অ}গমন নহি, এখানে ভ্রমণ করিতে আসিয়াছি ।” দালালের চলিয়া গেলে দেবরাজ কহিলেন, “বরুণ ইহার কারণ ?” বরুণ। ইহার কতকগুলি মূর্থ লোক। ইহাদের বিদ্যা বুদ্ধি তাদৃশ নাই ; সংসার প্রতিপালনের নিমিত্ত এই স্থানে আসিয়া ঘুরিয়া বেড়ায় এবং এক পয়সা মূলোর ফারম্ পূরণ করিয়া স্বাক্ষর প্রভৃতি করাইয়া আনিয়া দিয়া পয়সা লয়। অগ্রে ইহারা পয়সা চুক্তি করিয়া থাকে। নারা । আহা ! কলিকাতা সহরে কত লোকেই কত উপায়ে জীবিকা নিৰ্ব্বাহ করিতেছে । এখান হইতে যাইতে যাইতে বরুণ কহিলেন, “নারায়ণ ! ইষ্ট ইণ্ডিয়া রেলওয়ে কোম্পানীর আফিস দেখ। পূৰ্ব্বে এই সমস্ত আফিস রাইটার্স বিপ্লডিংয়ে ছিল, এক্ষণে উক্ত কোম্পানী এই বাড়ীটী নিৰ্ম্মাণ করিয়াছেন । এখানেও বিস্তর কেরাণী কাজকৰ্ম্ম করিতেছে।” ব্ৰহ্মা । বরুণ ! আর কেরাণী না বলিয়া বিস্তর চাকর কাজকৰ্ম্ম করিতেছে বল। কি আশ্চৰ্য্য । যাহাকে দেখি, যাহার সঙ্গে আলাপ পরিচয় করি, সেই কেরাণী। দোকানদার, মহাজন, অধ্যাপক, চিকিৎসক, চামার, কুম্ভকার, কৰ্ম্মকার আর চক্ষে দেখিতে পাওয়া যায় না সকলেই কেরাণী । বরুণ । পরাধীন জাতির পরাধীন থাকিতে এত সাধ ? দেশ উৎসন্ন যাইতেছে, দেশের শিল্পশাস্ত্রের বিলোপ হইতেছে, যাহারা দেখিয়াও দেখে না, তাহীদের মত বোকা জাতি কি দুনিয়ায় আছে ? বরুণ । ঠাকুর দা ! চাকরী করা বাঙ্গালীজাতির সংক্রামক-রোগ হইয়া দাড়াইয়াছে। নচেৎ যে অধ্যাপকের জগংজুড়ে মানসম্ৰম, যাহার গৃহে বিদায়ের ঘট, বাটী, থালা, ঘড়া রাখিবার স্থান হয় না, তিনিও নিজ ব্যবসায়ে ধিক্কার দিয়া পুত্রকে পনের টাকার কেরাণী প্রস্তুত করিতেছেন। যে কবিরাজ ধন্বন্তরি নামে পরিচিত হইয়া অর্জিত ধন বহন করিয়া আনিতে পারিতেন না, তিনিও নিজ ব্যবসায় পরিত্যাগ করিয়া পুত্রকে ইংরাজী শিখাইয়া কেরাণী প্রস্তুত করিতেছেন। যে কুম্ভকার উত্তম উত্তম ছবি ও পট আঁকিয়া স্বাধীনভাবে ৪ •৫০ টাকা উপার্জন করে, সেও কাদা ছানা অতি জঘন্ত ব্যবসায় বলিয়া নিজ পুত্রকে ইংরাজী শিখাইয় কেরাণী তৈয়ার করিতেছে। এইরূপে ধোপা, নাপিত, মেথর, মূদফরাস সকলেই কেরাণী হইবার জন্য হাত ধুইয়া বসিয়া আছে। 8b*経過