পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/৪৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কলিকাতা গঙ্গা নাই, সে দেশ দেশই নহে, শৈলও নহে এবং বনও নহে ; এজন্ত শত সহস্ৰ অসুবিধা সত্ত্বেও পণ্ডিতগণ গঙ্গাতীর পরিত্যাগ করিয়া অপর স্থানে যাইতে স্বীকৃত হন না । ভিক্ষীয়ে উদারপূৰ্ত্তি করিয়া গঙ্গাতীরে বাস করা ভাল, তথাপি রাজ্যপদবাঞ্ছা করা উচিত নহে । জাহ্নবীতীরে প্রাণত্যাগ হইলে ব্ৰহ্মহত্যাজনিত পাপে উদ্ধার হওয়া যায়, কিন্তু অন্যত্র শত অশ্বমেধ যজ্ঞেও সে পাপের প্রায়শ্চিত্ত নাই। যে ব্যক্তি মৃত্যুকালে ‘গঙ্গা গঙ্গা” বলিয়া প্রাণত্যাগ করে, সে অযুত বৎসর স্বর্গে বাস করিতে পায়। যে ব্যক্তির অস্থি যত কাল গঙ্গাগর্তে থাকে, সে তত কোট কল্প মহেন্দ্রভবনে বাস করে ; এবং যাহার অস্থি, ভস্ম, নখ ও কেশ গঙ্গাজলে নিমগ্ন হয়, সে বিষ্ণুলোক প্রাপ্ত হইয়া থাকে। দেখ বরুণ,— মার আমার কত মাহাত্মা ! বরুণ। আপনি ভাগীরথীর যে সমস্ত মাহীত্ম্যের ব্যাখ্যা করিলেন, দুঃখের বিষয়, লোকে তাহা না মানিয়া পদে পদে বিপরীত ব্যবহার করিয়া থাকে। ইহার তীরই মলত্যাগের এবং ইহার গর্তই এঠে। হাড়ি ফেলিবার প্রধান স্থান হইয়াছে। ইহার তীরেই এক্ষণে যত পাপকাৰ্য্য হইয়া থাকে। কারণ, জলদস্থ্যদিগের গঙ্গা প্রধান আডড ও প্রধান সহায়। এই জলে কত লোক কত লোকের সর্বনাশ করিতেছে, কত ব্ৰহ্মহত্যা ও গো-হত্যা ঘটতেছে । আপনি ব’ল্লেন, “যে দেশে গঙ্গা নাই, সে দেশ দেশই নয়, শৈলও নয় এবং বন নয়।” কিন্তু আজি কালি লোকের ধারণা হইয়াছে “যে দেশে রেলওয়ে নাই, সে দেশ দেশই নয় ।” অনেকে চাকরীর উপরোধে গঙ্গাগৰ্ভ ছাড়িয়া, যে দেশে রেলওয়ে অাছে, তথায় আসিয়া বাস করিতেছেন । গঙ্গা । বাবা! আমার এত মাহাত্ম্য, আমার প্রতি লোকের যত শ্রদ্ধা ভক্তি শুনলে ত ? ব্ৰহ্মা ৷ . মা ! লোকের যদি শ্রদ্ধা ও ভক্তি থাকিবে, তুমিই বা মর্ত্য হইতে যাইবে কেন ? আমিই বা তোমাকে লইয়া যাইবার জন্য এত আগ্রহ প্রকাশ করিব কেন ? যখন লোকের শ্রদ্ধা ও ভক্তি ছিল, তখন ত তুমি ভগীরথের স্তবে তুষ্ট হইয়াই আসিয়াছিলে ; এখন শ্রদ্ধা ভক্তি গিয়াছে, তুমিও দুই চারি বৎসর থাকিয়া স্বর্গে চল । আমরা এক্ষণে বিদায় হই। গঙ্গা। কি ক'রে থাকৃতে বলি ? অধিকক্ষণ জলে থাকলে পাছে সর্দি কালি হয় । 鑫?*