পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/৫৯০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবগণের মৰ্ত্তে আগমন লন। উহার ও দিকে ঐ যে বড় বাড়ী দেখা যাইতেছে, ঐখানে লেপার এসাইলম ছিল। মহাব্যাধি-রোগগ্রস্ত লোকদিগকে ঐ স্থানে রাখিয়া চিকিৎসা করা এবং পথ্যাদি দেওয়া হইত। ঐ এসাইলমটি সুপ্রসিদ্ধ দ্বারকানাথ ঠাকুরের অর্থে সংস্থাপিত হইয়াছিল। - ব্ৰহ্মা । দীনদুঃখীকে ঔষধ ও পথ্য প্রদান ত সহজ পুণ্য নহে । বরুণ, তুমি আমাকে স্বারকানাথ ঠাকুরের জীবনচরিত বল । বরুণ। ইনি ১২০১ সালে জন্মগ্রহণ করেন ; ইনি ইহার পিতৃব্য রামলোচন ঠাকুরের পোষ্যপুত্র। সিরবোরণ সাহেবের স্কুলে সামান্ত ইংরাজী শিক্ষা করিয়া শেষে নিজের বুদ্ধিবলে শাস্ত্রাদির আলোচনা করিয়া যথেষ্ট উন্নতি করিয়াছিলেন। প্রথমে ইনি একজন গোড় হিন্দু ছিলেন। পরিশেষে রামমোহন রায়ের সহিত আলাপ হইলে ব্রাহ্মধৰ্ম্ম গ্রহণ করেন । ইনিও প্রথমে ওকালতী, তৎপরে নিম্কির কালেক্টরির সেরস্তাদার হন। এই কাৰ্য্য করিতে করিতে ক্রমে বোড়ের দেওয়ান হন । অনেক দিন এই কাৰ্য্য করিয়া শেষে কৰ্ম্মত্যাগ করিয়া বাণিজ্য ব্যবসা আরম্ভ করেন । ইনি প্রথমে এই স্বাধীন ব্যবসা আরম্ভ করায় গবর্ণর লন্ড উইলিয়ম বেটিং একখানি অভিনন্দন পত্র প্রদান করিয়াছিলেন । ইহার পর ইনি কয়েকজন বাঙ্গালী ও সাহেবের সহিত একত্র হইয়া একটি ব্যাঙ্ক খুলেন এবং নীল, রেশম, চিনির কয়েকটি কুঠি স্থাপন করেন । এই সময় ইনি অনেকগুলি জমীদারী খরিদ করিয়াছিলেন । ইনি অত্যন্ত পরোপকারী ও দাতা ছিলেন । ২৪ পরগণার দাতব্য চিকিৎসালয়ে লক্ষ টাকা দান করেন । কলিকাতার জমীদার সভা ইহারই যত্বে ১২৬৫ সালে স্থাপিত হয়। ঐ সভাকে এক্ষণে ব্রিটিশ ইণ্ডিয়ান সভা কহে । ১২৪৯ সালে বিলাত যাত্র: করিলে মহারাণী ভারতেশ্বরী যথেষ্ট সমাদর করিয়াছিলেন । ইহার পর ইনি ইউরোপের অপরাপর দেশ দেখিয়া স্বদেশে প্রত্যাগত হন। ১২৫১ সালে পুনরায় ইনি বিলাতযাত্রা করেন এবং নিজ ব্যয়ে বিলাত হইতে ভাক্তারি শিখিয়া আসিবার জন্য ভোলানাথ বসু ও সুর্য্যকুমার চক্রবর্তীকে ( গুডিব চক্রবর্তী ) সঙ্গে করিয়া লইয়া যান। ১২৫৩ সালে ৫২ বৎসর বয়ঃক্রম কালে বেলফাই নগরে ইহার মৃত্যু হয়। কেন্সালগ্রীন নামক স্থানে ইহার সমাধি হইয়াছে। সমাধিস্তম্ভে রজতফলকে লেখা আছে “১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের ১লা জাগষ্ট কলিকাতার জমীদার দ্বারকানাথ ঠাকুরের মৃত্যু হইল।” দ্বারকানাথ ঠাকুরের বেলগেছিয়ার বাগান বড় বিখ্যাত । * +