পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/৬৩৬

দেবগণের মর্ত্যে আগমন এক সময় ইহাদের বেশ বিষয় বিভব ছিল, এক্ষণে অবস্থা অতি হীন হইয়া পড়িয়াছে। তৎপরে স্থখড়িয়া সোমড়া । মুখড়িয়ার মুস্তফী-উপাধি কায়স্থেরা বেশ সঙ্গতিশালী লোক। বড় মানুষের সমস্ত চিহ্ন আছে, অর্থাৎ দেবালয় প্রভৃতি আছে এবং প্রায় একশত আন্দাজ শিব গ্রামে বিরাজ করিতেছেন, কিন্তু তাহাদিগকে দুধ গঙ্গাজল খাইয়াই দিন কাটাইতে হয় এবং বর্ষাকালে জলে ভিজিয়া মরেন, কারণ মন্দিরগুলি মেরামত হয় কিনা সন্দেহ । তদ্ভিন্ন হরমুন্দরী, আনন্দময়ী প্রভৃতি বড় বড় কালীমূৰ্ত্তি বিরাজ করিতেছে, সম্মুখে একটা করিয়া নাটমন্দিরও আছে, কিন্তু প্রতিমাগুলির আহারাভাবে আর সৌন্দর্ঘ্য প্রভৃতি নাই। সুখড়িয়ার দেবদেবীদিগের মধ্যে নিস্তারিণী দেবী স্বথে আছেন । ইহার প্রতিষ্ঠাতার নাম "কাশীগতি মুস্তফা ! কাশীগতি শেষ দশাতে এই মূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠা করিয়া দিবারাত্রি ইহার হোম যাগে মগ্ন থাকিতেন । দেবীর নামে যথেষ্ট বিষয় দিয়াছেন । বিষয়ের আয় হইতে অদ্যাপি অতিথিসেবা ও ব্রাহ্মণভোজনাদি হইয়া থাকে । ই হার পুত্রেরাও বাপের কীৰ্ত্তি বজায় রাখিবার নিমিত্ত বিশেষ যত্ব ও মনোযোগ করিয়া থাকেন । সুখড়িয়ার পশ্চিমে সোমড়া । ইহা অতি প্রাচীন গ্রাম । বহুদিন হইতে এই গ্রামে বৈদ্যের বাস আছে ; ইহা বৈদ্ধপ্রধান স্থান বলিয়া খ্যাত। এই গ্রামস্থ বৈদ্যগণ মোগল সাম্রাটের অধিকারুকালে দিল্লী, লক্ষেী, মুরশীদাবাদ, ঢাকা প্রভৃতি স্থানে রাজকাৰ্য্যে উচ্চপদারূঢ় হইয়াছিলেন । ইহাদের মধ্যে রায় রামশঙ্কর ঢাকার নবাবের নায়েব দেওয়ান ছিলেন । তিনি এই গ্রামে ১৬৭৭ শকে নবরত্নশোভিত মন্দির প্রতিষ্ঠিত করিয়া তন্মধ্যে “মহাবিদ্যা” নামে জগদ্ধাত্রীমূৰ্ত্তি স্থাপিত করেন। অষ্ঠাপি উক্ত মন্দির ও প্রতিমা বর্তমান আছে। রামশঙ্করের কনিষ্ঠ ভ্রাতা রাজকিশোর মহীশূর রাজ্যের দেওয়ানী করিয়াছিলেন। র্তাহার প্রতিষ্ঠিত দেবমূৰ্ত্তি আছে। এই স্থানের রায়রায়ান রামচন্দ্র দৃঢ়প্রতিজ্ঞ স্বল্পদর্শী বিদ্বান ও বিচক্ষণ ব্যক্তি ছিলেন। মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র ইহার পিতা কৃষ্ণরামকে কারারুদ্ধ করিলে, প্রতিশোধ লইবার জন্য ইনি দিল্লী যাত্রা করেন এবং সম্রাট জাহক্ষদসাকে সন্তুষ্ট করিয়া “রায়রায়ান” উপাধি সহ এক সহস্র সৈন্ত রাখিবার অনুমতি প্রাপ্ত ও মুরশীদাবাদের নবাব আলিবদি সহ পরিচিত হয়েন এবং মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রকে মুরশীদাবাদে কারারুদ্ধ করিয়া নদীয় রাজ্য শাসন করেন। রাজার কারামুক্তি