পাতা:দেবগণের মর্ত্ত্যে আগমন (র‍্যাডিক্যাল হিউম্যানিস্ট সংস্করণ).djvu/৯৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

কাণী ক্রমে দেবগণের গাড়ী সদর রাস্তা পরিত্যাগ করিয়া গলি ঘুজির মধ্য দিয়া মণিকর্ণিকার ঘাটে যাইয়া উপস্থিত হইল । নারায়ণ বৃদ্ধ পিতামহের হাত ধরিয়া জলের নিকট লইয়া যাইলেন। তিনি উপস্থিত হইয়া কয়েক বিন্দু জল লইয়া মস্তকে স্পর্শ করিলেন এবং “আঃ! চরিভার্থ হইলাম” বলিয়, “স্বরধুন, এস মা ! কমণ্ডলুতে এস মা !" বলিয়া রোদন করিতে লাগিলেন এবং তাহার ঘন ঘন মোহ উপস্থিত হইতে লাগিল । বরুণ। আপনি করেন কি ? মর্ত্যে এসে কি পাগল হইলেন ? ব্রহ্ম | বরুণ, দাদা—সত্য বল, মাকে এত ডাকছি দেখা দিচ্চেন না কেন ? র্তার ত কোন অমঙ্গল ঘটে নাই ? বরুণ। গঙ্গার আবার অমঙ্গল কি, তার কি কিছু অমঙ্গল আছে ? ব্ৰহ্ম ৷ জানি কি ভাই, মর্ত্যে এসে স্থানে স্থানে যে জলের কল, স্থলের কল দেখতে পাচ্চি, মাকে আমার পাছে কোন কলঘরেতে জুড়ে থাকে। ভগীরথের অন্যায় দেখ, গঙ্গাকে আমার পৃথিবীতে এনে দেশময় ছড়িয়ে রেখেচে, এ স্থানে রাখলেও খুজে পেতাম । বরুণ । আপনার কোন ভয় নাই– যেখানে পারি গঙ্গার সহিত সাক্ষাৎ, করিয়ে দিব । ব্ৰহ্মাকে ঘন ঘন মূছ। যাইতে দেখিয়া বাঙ্গালী স্ত্রীলোকেরা নিকটে ছুটিয়া আসিল । একজন কহিল “মিন্সে পাগল ।” অপরা কহিল “গুলো ও নয়, বয়েস হওয়ায় মিন্সের ভীমরতি হয়েচে” । আর একজন কহিল “মিন্সে নিঃসন্দেহ বাঙ্গাল। বাঙ্গাল না হ’লে কি গঙ্গা বলে হাপুশ নয়নে কেঁদে মরে!” দেবগণ ইহার পর জলে নামিলেন। র্তাহারা এক গলা জলে দাড়াইয়া আছেন, গঙ্গাপুত্র আর মন্ত্র পড়ায় না ; কেবল দক্ষিণার জন্য দর কসাকসি করিতে লাগিল । শেষে নারায়ণ অত্যন্ত বিরক্ত হইয়া কহিলেন “দেখ, একটি করে আদলা পাবে-ইচ্ছা হয় মন্ত্র পড়াও নচেৎ এই আমি ডুব দিয়া ফেল্লাম।” বলিয়৷ ভুশ করে ডুব দিলেন। গঙ্গাপুত্ৰ দেখিল, একটা লোক হাতছাড়া হইল, অতএব বিলম্ব করা উচিত নহে, যা পাই তাই লাভ, ভাবিয়া মন্ত্র পড়াইতে লাগিল । স্বান সমাপনাস্তে ইন্দ্র বলিলেন “পিতামহ ! এ স্থানের নাম মণিকণিকা হইল কেন ?”