জন্য না হইলে কলিকাতার রানীগিরি পাইবার জন্যও চন্দ্রমুখী এত ভালবাসা তুচ্ছ করিয়া যাইতে পারিত না।
পরদিন সে ক্ষেত্রমণির বাটীতে আসিয়া উপস্থিত হইল। তাহার পূর্বের বাসাতে এখন অন্য লোক আসিয়াছে। ক্ষেত্রমণি অবাক হইয়া গেল—দিদি যে! কোথায় ছিলে এতদিন?
চন্দ্রমুখী সত্য কথা গোপন করিয়া বলিল, এলাহাবাদে ছিলাম।
ক্ষেত্রমণি ভাল করিয়া নজর দিয়া তাহার সর্বাঙ্গ নিরীক্ষণ করিয়া কহিল, তোমার গহনাগাঁটি কি হল দিদি?
চন্দ্রমুখী হাসিয়া সংক্ষেপে বলিল, সব আছে।
সেই দিন মুদীর সহিত দেখা করিয়া কহিল, দয়াল, কত টাকা আমি পাব?
দয়াল বিপদে পড়িল—তা বাছা, প্রায় ষাট-সত্তর টাকা। আজ না হোক দু'দিন পরে দিব।
তোমাকে কিছুই দিতে হবে না। যদি আমার কিছু কাজ করে দাও।
কি কাজ?
দু'দিন খাটতে হবে এই মাত্র। আমাদের পাড়ায় একটা বাড়ি ভাড়া করবে—বুঝলে?
দয়াল হাসিয়া বলিল, বুঝেছি বাছা।
ভাল বাড়ি। বেশ ভাল বিছানা, বালিশ, চাদর, আলো, ছবি, দুটো চেয়ার, একটা টেবিল—বুঝলে?
দয়াল মাথা নাড়িল।
আরশি, চিরুনি, রং-করা দু'জোড়া কাপড়, গায়ের জামা, আর—ভাল গিল্টির গয়না কোথায় পাওয়া যায় জান?
দয়াল মুদী ঠিকানা বলিয়া দিল।
চন্দ্রমুখী কহিল, তবে তাও এক সেট ভাল দেখে কিনতে হবে—আমি সঙ্গে গিয়ে পছন্দ করে নেব। তারপর হাসিয়া কহিল, আমাদের যা চাই, জানো তো সব,—একজন ঝিও ঠিক করতে হবে।
দয়াল কহিল, কবে চাই বাছা?