পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

У o a જો નાશ মুখে শুনিতে পাই, “মূৰ্খস্ত লাঠ্যেীষধ ” এখন মূখের ঔষধ “বাপু” “বাছ”—তাহাতেও রোগ ভাল হয় না। তোমার সগোত্র সপিণ্ডগণের মধ্যে অনেকেরই গুণ এই নিয়াতে জাজ্বল্যমান। ইস্তক আড়া বাকারি খুটি খোটা লাগায়েৎ শ্ৰীনন্দনন্দলের মোহন বংশী, সকলেরই গুণ বুৰি . কিন্তু লাঠি! তোমার মত কেহ না। তুমি আর নাই—গিয়াছ । ভরসা করি, তোমার অক্ষয় স্বৰ্গ হইয়াছে ; তুমি ইন্দ্রলোকে গিয়া নন্দনকাননের পুষ্পভারাবনত পারিজাত-বৃক্ষশাখার । ঠেক্‌নো হইয়া আছ, দেবকস্তারা তোমার ঘায় কল্পবৃক্ষ হইতে ধৰ্ম্ম অর্থ কাম মোক্ষরূপ ফল সকল পাড়িয়া লইতেছে। এক আধটা ফল যেন পৃথিবীতে গড়াইয়া পড়ে। . " যার লাঠির ভয়ে এত সিপাহীর সমাগম, তার কাছে একখানি লাঠিগুছিল লা। নিকটে একটি লাঠিয়ালও ছিল না। দেবী সেই ঘাটে—যে ঘাটে বজরা বাধিয়া ব্রজেশ্বরকে বন্দী করিয়া আনিয়াছিল, সেই ঘাটে। সবে সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়াছে মাত্র। সেই বজরা তেমনই সাজান—সব ঠিক সে রকম নয়। সে ছিপখানি সেখানে নাই—তাহাতে যে পঞ্চাশ জন লাঠিয়াল ছিল, তাহারা নাই। তার পর বজরার উপরেও একটি পুরুষমানুষ নাই—মাঝি মাল্লা, রঙ্গরাজ প্রভৃতি কেহ নাই। কিন্তু বজরার মাস্তুল উঠান-চারিখানা পাল তোলা আছে— বাতাসের অভাবে পাল মাস্তুলে জড়ান পড়িয়া আছে । বজরার নোঙ্গরও ফেলা নহে, কেবল ছগাছা কাছিতে তীরে খোটায় বাধা আছে। - তৃতীয়, দেবী নিজে তেমন রত্নাভরণভূষিত মহার্ঘবস্ত্রপরিহিতা নয়, কিন্তু অরি . এক প্রকারে শোভা আছে। ললাট, গণ্ড, বাহু, হৃদয়, সৰ্ব্বাঙ্গ সুগন্ধি চন্দনে চর্চিত ; চন্দ্বর্ণচচ্চিত ললাট বেষ্টন করিয়া সুগন্ধি পুষ্পের মালা শিরোদেশের বিশেষ শোভা বৃদ্ধি করিয়াছে। হাতে ফুলের বালা। অন্য অলঙ্কার একখানিও নাই। পরণে সেই মোট শাড়ী । আর, আজ দেবী এক ছাদের উপর বসিয়া নহে, কাছে আর দুই জন স্ত্রীলোক বসিয়া । একজন নিশি, অপর দিবা । এই তিন জনে যে কথাটা হইতেছিল, তাহার মাঝখান হইতে বলিলেও ক্ষতি নাই । - দিবা বলিতেছিল—দিব৷ অশিক্ষিত, ইহা পাঠকের স্মরণ রাখা উচিত—বলিতেছিল, “হা, পরমেশ্বরকে না কি আবার প্রত্যক্ষ দেখা যায় ?” প্রফুল্প বলিল, “ন, প্রত্যক্ষ দেখা যায় না। কিন্তু আমি প্রত্যক্ষ দেখার কথা?