দেবী চৌধুরাণী । به لالا দেবী। কার ভেরী ঐ ? - - - নিশি । যেন দাড়ি বাবাজীর বলিয়া বোধ হয়। দেবী। রঙ্গরাজের ? : - নিশি। সেই রকম। দেবী । সে কি ? অামি রঙ্গরাজকে প্রাতে দেবীগড় পাঠাইয়াছি। নিশি । বোধ হয়, পথ হইতে ফিরিয়া আসিয়াছে। দেবী। রঙ্গরাজকে ডাক । ব্রজেশ্বর বলিল, “ভেরীর আওয়াজ অনেক দূর হইতে হইয়াছে। এখান হইতে ডাকিলে ডাক শুনিতে পাইবে না। আমি নামিয়া গিয়া ভেরীওয়ালাকে খুজিয়া আনিতেছি।” দেবী বলিল, “কিছু করিতে হইবে না। তুমি একটু নীচে গিয়া নিশির কৌশল দেখ।” নিশি ও ব্রজ নীচে আসিল। নিশি নীচে গিয়া, এক বঁাশী বাহির করিল। নিশি গীত বাছে বড় পটু, সে শিক্ষাট রাজবাড়ীতে হইয়াছিল। নিশিই দেবীর বীণার ওস্তাদ । নিশি বঁাশীতে ফু দিয়া মল্লারে তান মারিল। অনতিবিলম্বে রঙ্গরাজ বজরায় আসিয়া উঠিয়, দেবীকে আশীৰ্ব্বাদ করিল। 4. এই সময়ে ব্রজেশ্বর নিশিকে বলিল, “তুমি ছাদে যাও। তোমার কাছে কেত বোধ হয়, কথা লুকাইবে না। কি কথা হয়, শুনিয়া আসিয়া আমাকে সব বলিও।” নিশি স্বীকৃত হইয়া, কামরার বাহির হইল—বাহির হইয়া আবার ফিরিয়া আসিয় ব্ৰজেশ্বরকে বলিল, “আপনি একটু বাহিরে আসিয়া দেখুন।” ব্ৰজেশ্বর মুখ বাড়াইয়া দেখিল। দেখিতে পাইল, জঙ্গলের ভিতর হইতে অগণি । মল্লযু বাহির হইতেছে। নিশিকে জিজ্ঞাসা করিল, “উহার কারা ? সিপাই ?” নিশি বলিল, “বোধ হয় উহার বরকন্দাজ। রঙ্গরাজ আনিয়া থাকিবে।” দেবীও সেই মমুম্ভশ্রেণী দেখিতেছিল, এমন সময়ে রঙ্গরাজ আসিয়া আশীৰ্ব্বাদ করিল। দেবী জিজ্ঞাসা করিল, “তুমি এখানে কেন, রঙ্গরাজ ?” রঙ্গরাজ প্রথমে কোন উত্তর করিল না। দেবী পুনরপি বলিল, “আমি সকালে তোমাকে দেবীগড় পাঠাইয়াছিলাম। সেখানে যাও নাই কেন ? আমার কথা অমান্ত করিয়াছ কেন f রঙ্গ। আমি দেবীগড় যাইতেছিলাম—পথে ঠাকুরজির সঙ্গে সাক্ষাৎ হইল। দেবী। ভবানী ঠাকুর ? রঙ্গ। তার কাছে শুনিলাম, কোম্পানির সিপাহী আপনাকে ধরিতে আসিতেছে।
পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।