পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেবীর রাণীগিরিতে গুটিকতক চমৎকার গুণ জন্ধিয়াছিল। তার একটি এই যে, যে সামগ্রীর কোন প্রকার প্রয়োজন হইতে পারে, তাহ জাগে গুছাইয়া হাতের কাছে রাখিতেন । এ গুণের পরিচয় অনেক পাওয়া গিয়াছে। দেবী এখন হাতের কাছেই পাইলেন-একটি সাদা নিশান। সাদা নিশানটি বাহিরে লইয়া গিয়া স্বহস্তে উচু করিয়া ধরিলেন। । সেই নিশান দেখাইবামাত্র লড়াই একেবারে বন্ধ হইল। যে যেখানে ছিল, সে সেইখানেই হাতিয়ার ধরিয়া চুপ করিয়া দঁাড়াইয়া রহিল। ঝড় তুফান যেন হঠাৎ থামিয়া গেল, প্রমত্ত সাগর যেন অকস্মাৎ প্রশান্ত হ্রদে পরিণত হইল। দেবী দেখিল, পাশে ব্রজেশ্বর। এই যুদ্ধের সময়ে দেবীকে বাহিরে আসিতে দেখিয়া, ব্রজেশ্বরও সঙ্গে সঙ্গে আসিয়াছিল। দেবী তাহাকে বলিল, “তুমি এই নিশান এইরূপ ধরিয়া থাক। আমি ভিতরে গিয়া নিশি ও দিবার সঙ্গে একটা পরামর্শ আঁটিব । রঙ্গরাজ যদি এখানে আসে, তাহাকে বলিও, সে দরওয়াজ হইতে আমার হুকুম লয়।” এই বলিয়া দেবী ব্ৰজেশ্বরের হাতে নিশান দিয়া চলিয়া গেল। ব্রজেশ্বর নিশান তুলিয়া ধরিয়া দাড়াইয়া রহিল। ইতিমধ্যে সেখানে রঙ্গরাজ আসিয়া উপস্থিত হইল। রঙ্গরাজ ব্রজেশ্বরের হাতে সাদা নিশান দেখিয়া, চোখ ঘুরাইয়া বলিল, “তুমি কার হুকুমে সাদা নিশান দেখাইলে ।” बछ । ब्रागैौछिन्न छ्कूश । রঙ্গ। রাণীজির হুকুম ? তুমি কে ? f ব্রজ । চিনিতে পার না ? রঙ্গরাজ একটু নিরীক্ষণ করিয়া বলিল, “চিনিয়াছি। তুমি ব্রজেশ্বরবাৰু ? এখানে কি মনে করে ? বাপ বেটায় এক কাজে না কি ? কেহ একে বাধ।” রঙ্গরাজের ধারণা হইল যে, হরবল্লভের স্যায় দেবীকে ধরাইয়া দিবার জন্যই ব্রজেশ্বর । কোন ছলে বজরায় প্রবেশ করিয়াছে। তাহার আজ্ঞা পাইয়া দুই জন ব্রজেশ্বরকে বাধিতে । আসিল। ব্রজেশ্বর কোন আপত্তি করিলেন না, বলিলেন, “আমায় বাধ, তাতে ক্ষতি নাই, . কিন্তু একটা কথা বুঝাইয়া দাও। সাদা নিশান দেখিয়াই দুই দলে যুদ্ধ বন্ধ করিল কেন ?" রঙ্গরাজ বলিল, “কচি খোকা আর কি ? জান না, সাদা নিশান দেখাইলে ইংরেজের আর যুদ্ধ করিতে নাই ?” - ত্র। তা আমি জানিতাম না। তা আমি জানিয়াই করি, আর না জানিয়াই করি, রাণীজির হুকুম মত সাদা নিশান দেখাইয়াছি কি না, তুমি না হয় জিজ্ঞাসা করিয়া আইল। " আর তোমায়ও আজ্ঞা আছে যে, তুমি দরওয়াজা হইতে রাণীজির হুকুম লইবে । *... . .