%ჯb r দেৰী চৌধুরাণী । লেফটেনাণ্ট সাহেব ! আমার এ ভগিনী কিছু রঙ্গ তামাসা ভাল বাসে, কিন্তু এ তার সময় নয়। আপনি আমার সঙ্গে কথা কহিবেন—আমি দেবী চৌধুরাণী।” :് নিশি বলিল, “আমরণ ! তুই কি আমার জন্য ফঁাসি যেতে চাস না কি ?” সাহেবের দিকে ফিরিয়া নিশি বলিল, “সাহেব, ও আমার ভগিনী—বোধ হয়, স্নেহবশত: আমাকে রক্ষা করিবার জন্য আপনাকে প্রতারণা করিতেছে। কিন্তু কেমন করিয়া মিথ্যা প্রবঞ্চনা করিয়া, বহিনের প্রাণদণ্ড করিয়া, আপনার প্রাণ রক্ষা করিব ? প্রাণ অতি তুচ্ছ, আমরা বাঙ্গালির মেয়ে, অক্লেশে ত্যাগ করিতে পারি। চলুন, আমাকে কোথায় লইয়া যাইবেন, যাইতেছি। আমিই দেবী রাণী ।” - দিবা বলিল, “সাহেব ! তোমার যিশু খ্ৰীষ্টের দিব্য, তুমি যদি নিরপরাধিনীকে ধরিয়া লইয়া যাও। আমি দেবী ।” - সাহেব বিরক্ত হইয়া রঙ্গরাজকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “এ কি তামাসা ? কে দেবী চৌধুরাণী, তুমি যথার্থ বলিবে ?” - - রঙ্গরাজ কিছু বুঝিল না, কেবল অনুভব করিল যে, ভিতরে একটা কি কৌশল আছে। অতএব বুদ্ধি খাটাইয়া সে নিশিকে দেখাইয়া, হাতযোড় করিয়া বলিল, “হুজুর । এই যথার্থ দেবী রাণী ।” • তখন দেবী প্রথম কথা কহিল। বলিল, “আমার ইহাতে কথা কহ বড় দোষ । কিন্তু কি জানি, এর পর মিছা কথা ধরা পড়িলে, যদি সকলে মারা যায়, তাই বলিতেছি, এ ব্যক্তি যাহা বলিতেছে, তাহা সত্য নহে।” পরে নিশিকে দেখাইয়া বলিল, “এ দেবী নহে। যে উহাকে দেবী বলিয়া পরিচয় দিতেছে, সে রাণীজিকে মা বলে, রাণীজিকে মার মত ভক্তি করে, এই জন্য সে রাণীজিকে বাচাইবার জন্য অন্য ব্যক্তিকে নিশান দিতেছে।” , “o তখন সাহেব দেবীকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “দেবী তবে কে ?” দেবী বলিল, “আমি দেবী " ` - দেবী এই কথা বলিলে নিশিতে, দিবাতে, রঙ্গরাজে ও দেবীতে বড় গণ্ডগোল বাধিয়া গেল। নিশি বলে, “আমি দেবী,” দিবা বলে, “আমি দেবী,” রঙ্গরাজ নিশিকে বলে, “এই দেবী,” দেবী বলে, “আমি দেবী।” বড় গোলমাল । তখন লেফটেনাণ্ট, সাহেব মনে করিলেন, এ ফেরেবৃবাজির একটা চূড়ান্ত করা উচিত। বলিলেন, “তোমাদের দুই জনের মধ্যে এক জন দেবী চৌধুরাণী বটে। ওটা চাকরাণী, ওটা দেবী নহে। এই স্থই জনের মধ্যে কে সে পাপিষ্ঠ, তাহা তোমরা চাতুরী করিয়া আমাকে জানিতে
পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৩৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।