তৃতীয় খণ্ড-নবম পরিচ্ছেদ צלאל - “পান্ধী বেহার পাওয়া যাইবে ?” “আমি চেষ্টা করিলে সব পাওয়া যাইবে।” দেবী নিশিকে বলিল, “তবে আমার শ্বশুরকে স্নানাহিকে নামাইয়া দাও।” দিবা । এত তাড়াতাড়ি কেন ? - নিশি। শ্বশুরের ছেলে সমস্ত রাত্রি বাহিরে বসিয়া আছে, মনে নাই ? বাছাধন সমুদ্র লঙ্ঘন করিয়া লঙ্কায় আসিতে পারিতেছে না, দেখিতেছ না ? এই বলিয়া নিশি রঙ্গরাজকে ডাকিয়া, হরবল্লভের সাক্ষাতে বলিল, “সাহেবটাকে ফঁাসি দিতে হইবে। ব্রাহ্মণটাকে এখন শূলে দিয়া কাজ নাই। উহাকে পাহারাবন্দী করিয়া স্নানাহিকে পাঠাইয়া দাও।” হরবল্লভ বলিলেন, “আমার উপর হুকুম কিছু হইয়াছে ?” নিশি চোক টিপিয়া বলিল, “আমার প্রার্থনা মঞ্জুর হইয়াছে। তুমি স্নানাহ্নিক করিয়া আইস ।” নিশি রঙ্গরাজের কানে কানে বলিল, “পাহার। মানে জল-আচরণী ভূত্য ।" রঙ্গরাজ সেইরূপ বন্দোবস্ত করিয়া হরবল্লভকে স্নানাহিকে নামাইয়া দিল । তখন দেবী নিশিকে বলিল, “সাহেবটাকে ছাড়িয়া দিতে বল। সাহেবকে রঙ্গপুর ফিরিয়া যাইতে বল । রঙ্গপুর অনেক দূর, এক শত মোহর উহাকে পথখরচ দাও, নহিলে এত পথ যাইবে কি প্রকারে ?” নিশি শত স্বর্ণ লইয়া গিয়া রঙ্গরাজকে দিল, আর কানে কানে উপদেশ দিল । উপদেশে দেবী যাহা বলিয়াছিল, তাহা ছাড়া আরও কিছু ছিল। রঙ্গরাজ তখন দুই জন বরকন্দাজ লইয়া আসিয়া সাহেবকে ধরিল । বলিল, “উঠ।” সাহেব। কোথা যাইতে হইবে ? রঙ্গ ! তুমি কয়েদী—জিজ্ঞাসা করিবার কে ? সাহেব বাক্যব্যয় না করিয়া রঙ্গরাজের পিছু পিছু দুই জন বরকন্দাজের মাঝে চলিল । যে ঘাটে হরবল্লভ স্নান করিতেছিলেন, সেই ঘাট দিয়া তাহারা যায়। হরবল্লভ জিজ্ঞাসা করিল, “সাহেবকে কোথায় লইয়া যাইতেছ?” রঙ্গরাজ বলিল, “এই জঙ্গলে ।” হর। কেন ? রঙ্গ। জঙ্গলের ভিতর গিয়া উহাকে ফঁাসি দিব ।
পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৪৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।