দেবী চৌধুরাণীর বিভিন্ন সংস্করণের দেবী চৌধুরাণী বঙ্গদর্শনের ৯৯ সংখ্যায় (পৌষ, ১২৮৯) মুরু হইয়৷ ১০৬ সংখ্যা (মাঘ, ১২৯০ ) পৰ্য্যন্ত অংশতঃ প্রকাশিত হয়। ১০৬ সংখ্যার পর বঙ্কিম-যুগের বঙ্গদর্শন আর বাহির হয় নাই বলিয়া দেবী চৌধুরাণীও অসমাপ্ত রহিয়া যায়। বঙ্গদর্শনে প্রথম খণ্ড সপ্তদশ পরিচ্ছেদে এবং দ্বিতীয় খণ্ড দ্বাদশ পরিচ্ছেদে সম্পূর্ণ হইয়াছিল। বঙ্কিমচন্দ্র ১২৯১ সালের বৈশাখ মাসে (১৮৮৪ খ্ৰীষ্টাব্দ, মে) সম্পূর্ণ গ্রন্থ একেবারে পুস্তকাকারে বাহির করেন। ইহা “৩৭ নং মেছুয়াবাজার ষ্ট্রীট-বীণাযন্ত্রে শ্ৰীশরচ্চন্দ্র দেব কর্তৃক মুদ্রিত” ও “ঐউমাচরণ বন্দোপাধ্যায় কর্তৃক প্রকাশিত" হয়। প্রথম সংস্করণের পুস্তক মোট তিন খণ্ডে (১৬+১২+১৪) বিয়াল্লিশ পরিচ্ছেদে ২০৬ পৃষ্ঠায় সম্পূর্ণ হয়। নিতান্ত পরিণত বয়সের রচনা হওয়া সত্ত্বেও বঙ্গদর্শনে প্রকাশিত অংশ পুস্তকাকারে যে ভাবে পরিবর্তিত হইয়াছে, তাহা পৰ্য্যালোচনা করিলে, বঙ্কিমচন্দ্রের নিত্যপরিবর্তনপ্রয়াসী মনের পরিচয় পাওয়া যায়। প্রথম খণ্ডের নবম হইতে সপ্তদশ, এই নয় পরিচ্ছেদকে তিনি যে শুধু ভাঙ্গিয়া আট পরিচ্ছেদেই শেষ করিয়াছেন, তাহা নয়, আগাগোড়া একেবারে ঢালিয়া সাজিয়াছেন । সাময়িক-পত্রিকায প্রকাশিত পাঠ আমাদের আলোচনার বিষয় নহে বলিয়া এই সকল বিচিত্র পরিবর্তন প্রদর্শিত হইল না । বঙ্কিমের জীবিতকালে দেবী চৌধুরাণী’র ছয়টি মাত্র সংস্করণ হইয়াছিল ; পুস্তকাকারে প্রকাশিত হইবার পর বঙ্কিমচন্দ্র ইহার খুব বেশী পরিবর্তন করেন নাই। দ্বিতীয় সংস্করণ (১২৯১, পৃ. ২০৬) প্রথম সংস্করণের হুবহু অনুরূপ। তৃতীয় সংস্করণ ১৮৮৭ খ্ৰীষ্টাব্দের ২৫এ জানুয়ারি প্রকাশিত হইয়াছিল, পৃষ্ঠা-সংখ্যা ২২৩। চতুর্থ সংস্করণ সম্ভবতঃ ১৮৮৭ খ্ৰীষ্টাবেই বাহির হইয়াছিল, আমরা এই সংস্করণ একখানিও সংগ্ৰহ করিতে পারি নাই। পঞ্চম ( ১৮৮৮ খ্ৰীষ্টাব্দ ) ও ষষ্ঠ (১৮৯১ খ্ৰীষ্টাব্দ) সংস্করণ অনেকটা এক, দুইটিই ২৩১ পৃষ্ঠায় সম্পূর্ণ। সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিক পরিবর্তন যাহা লক্ষিত হয়, তাহা ষষ্ঠ অর্থাৎ শেষ সংস্করণে সাধিত হইয়াছে— দ্বিতীয় খণ্ডের দ্বাদশ পরিচ্ছেদে (পৃ. ৯৫ দ্রষ্টব্য) যে দুইটি অংশ বর্জিত হইয়াছে, পঞ্চম সংস্করণ পৰ্য্যন্ত তাহা বরাবরই ছিল। প্রথম সংস্করণের “ডাকাত” ষষ্ঠ সংস্করণের প্রায় সৰ্ব্বত্র “ডাকাইত” হইয়াছে। فه প্রথম ও ষষ্ঠ সংস্করণের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নিয়ে লিপিবদ্ধ হইল –
পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৫৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।