পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

so দেবী চৌধুরাণী এই বলিয়া প্রফুল্পের মা বাটীর বাহির হইয়া চলিয়া গেল। অভাগীর তখনও আহার হয় নাই । - মা গেল, কিন্তু প্রফুল্ল গেল না। যেমন ঘোমটা দেওয়া ছিল, তেমনই ঘোমটা দিয়া দাড়াইয়া রহিল। শাশুড়ী বলিল, “তোমার মা গেল, তুমিও যাও।” প্রফুল্ল নড়ে না। গিল্পী। নড় না যে ? প্রফুল্ল নড়ে না। গিল্পী। কি জালা! আবার কি তোমার সঙ্গে একটা লোক দিতে হবে না কি ? এবার প্রফুল্ল মুখের ঘোমটা খুলিল ; চাদপান মুখ, চক্ষে দর দর ধারা বহিতেছে। শাশুড়ী মনে মনে ভাবিলেন, “আহা ! এমন চাদপান বেী নিয়ে ঘর করতে পেলেম না ।” মন একটু নরম হলো । প্রফুল্ল অতি অফুটস্বরে বলিল, “আমি যাইব বলিয়া আসি নাই।” গিন্নী। তা কি করিব মা—আমার কি অসাধ যে, তোমায় নিয়ে ঘর করি ? লোকে পাচ কথা বলে—একঘরে করবে বলে, কাজেই তোমায় ত্যাগ করতে হয়েছে। প্রফুল্ল। মা, একঘরে হবার ভয়ে কে কবে সন্তান ত্যাগ করেছে ? আমি কি তোমার 帜 সস্তান নই ? শাশুড়ীর মন আরও নরম হলো । * বলিলেন, “কি করব মা, জেতের ভয় ।” প্রফুল্ল পূর্ববং অফুটস্বরে বলিল, “হলেম যেন আমি অজাতি—কত শূদ্র তোমার ঘরে দাসীপনা করিতেছে—আমি তোমার ঘরে দাসীপনা করিতে দোষ কি ?” গিল্পী আর যুঝিতে পারিলেন না। বলিলেন, “তা মেয়েটি লক্ষ্মী, রূপেও বাক্ট, কথায়ও বটে। তা যাই দেখি কৰ্ত্তার কাছে, তিনি কি বলেন। তুমি এখানে বসে মা, বসে fo ro r - প্রফুল্ল তখন চাপিয়া বসিল । সেই সময়ে, একটি কপাটের আড়াল হইতে একটি চতুর্দশবর্ষীয়া বালিকা—সেও সুন্দরী, মুখে তাড়ঘোমটা—সে প্রফুল্লকে হাতছানি দিয়া ডাকিল। প্রফুল্ল ভাবিল, এ আবার কি ? উঠিয়া বালিকার কাছে গেল।