$१ প্রফুল্প কোথায় গিয়াছে, তাহ পাঠকের স্মরণ থাকিতে পারে। একখানা কপাটের আড়াল হইতে ঘোমটা দিয়ে একটি চোদ্দ বছরের মেয়ে তাকে হাতছানি দিয়া ডাকিয়াছিল। প্রফুল্ল সেখানে গেল। প্রফুল্ল সেই ঘরের ভিতর প্রবেশ করিবামাত্র বালিকা দ্বার রুদ্ধ করিল। প্রফুল্ল বলিল, “দ্বার দিলে কেন ?” মেয়েটি বলিল, “কেউ না আসে। তোমার সঙ্গে দুটো কথা কব, তাই।” প্রফুল্ল বলিল, “তোমার নাম কি ভাই ?” সে বলিল, “আমার নাম সাগর, ভাই ।” প্র । তুমি কে, ভাই ? সা। আমি, ভাই, তোমার সতীন। প্র। তুমি আমায় চেন নাকি ? সা। এই যে আমি কপাটের আড়াল থেকে সব শুনিলাম । প্র। তবে তুমিই ঘরণী গৃহিণী— সা। দূর, তা কেন ? পোড়া কপাল আর কি-আমি কেন সে হতে গেলেম ? আমার কি তেমনই দাত উচু, না আমি তত কালো ? প্র। সে কি—কার দাত উচু ? সা। কেন ? যে ঘরণী গৃহিণী। প্র । সে আবার কে ? সা। জান না ? তুমি কেমন করেই বা জানবে ? কখন ত এসে নি, আমাদের আর এক সতীন আছে জান না ? প্র। আমি ত আমি ছাড়া আর এক বিয়ের কথাই জানি-আমি মনে করিয়াছিলাম । সেই তুমি। সা। না । সে সেই,—আমার ত তিন বছর হলো বিয়ে হয়েছে। প্র । সে বুঝি বড় কুৎসিত ? সা। রূপ দেখে আমার কান্না পায় ! প্র। তাই বুঝি আবার তোমায় বিবাহ করেছে ? সা। না, তা নয়। তোমাকে বলি, কারও সাক্ষাতে বলে না। (সাগর বড় চুপি চুপি কথা কহিতে লাগিল ) আমার বাপের ঢের টাকা আছে। আমি বাপের এক সন্তান। তাই সেই টাকার জন্য— -
পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/২৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।