পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९8 - দেবী চৌধুরাণী ত্র। নিতান্ত পক্ষে, তিনি যাহাতে তোমার খোরপোষ পাঠাইয়া দেন, তা আমায় করিতে হইবে। --- প্র । তিনি আমায় ত্যাগ করিয়াছেন, আমি তার কাছে ভিক্ষা লইব না । তোমার নিজের যদি কিছু থাকে, তবে তোমার কাছে ভিক্ষা লইব । ... ব্র। আমার কিছুই নাই, কেবল আমার এই আঙ্গটিটি আছে। এখন এইটি লইয়া যাও । আপাততঃ ইহার মূল্যে কতক দুঃখ নিবারণ হইবে। তার পর যাহাতে আমি তু পয়সা রোজগার করিতে পারি, সেই চেষ্টা করিব । যেমন করিয়া পারি, আমি তোমার ভরণ পোষণ করিব। ~. এই বলিয়া ব্রজেশ্বর আপনার অঙ্গুলি হইতে বহুমূল্য হীরকাঙ্গুরীয় উন্মোচন করিয়া প্রফুল্লকে দিল। প্রফুল্ল আপনার আঙুলে আঙ্গটিটি পরাইতে পরাইতে বলিল, “যদি তুমি আমাকে ভুলিয়া যাও ?” ব্র। সকলকে ভুলিব—তোমায় কখন ভুলিব না। প্র । যদি এর পর চিনিতে না পার ? ব্র । ও মুখ কখনও ভুলিব না । প্র। আমি এ আঙ্গটিটি বেচিব না। না খাইয়া মরিয়া যাইব, তবু কখন বেচিব না। যখন তুমি আমাকে না চিনিতে পারবে, তখন তোমাকে এই আঙ্গটি দেখাইব। ইহাতে কি লেখা আছে ? s 編 ব্র । আমার নাম খোদা আছে। দুই জনে অশ্রুজলে নিষিক্ত হইয়া পরস্পরের নিকট বিদায় গ্রহণ করিল। প্রফুল্ল নীচে আসিলে সাগর ও নয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ হইল। পোড়ারমুখী নয়ান বলিল, “দিদি, কাল রাত্রে কোথায় শুইয়াছিলি ?” প্র। ভাই, কেহ তীর্থ করিলে সে কথা আপনার মুখে বলে না । ন। সে আবার কি ? সাগর। বুঝতে পারিস নে ? কাল উনি আমাকে তাড়াইয়া আমার পালঙ্কে, বিষ্ণুর লক্ষ্মী হইয়াছিলেন। মিন্সে আবার সোহাগ করে আঙ্গটি দিয়েছে। সাগর নয়ানকে প্রফুল্লের হাতে ব্রজেশ্বরের আঙ্গটি দেখাইল । দেখিয়া নয়ানতারা হাড়ে হাড়ে জ্বলিয়া গেল। বলিল, “দিদি, ঠাকুর তোমার কথার কি উত্তর দিয়াছেন, শুনেছ ?”