প্রথম খণ্ড-একাদশ পরিচ্ছেদ శ్రీసి এক হাটে যাইও না। বিপদে পড়িবে। এইখানে আমার একখানা দোকান আছে। যদি ইচ্ছা হয়, তবে সেখান হইতে চাল দাল কিনিতে পার ” প্রফুল্ল বলিল, “সেই হলে ভাল হয়। কিন্তু আপনাকে ত ব্রাহ্মণপণ্ডিতের মত দেখিতেছি ।” ব্রা। ব্রাহ্মণপণ্ডিত অনেক রকমের আছে। বাছা! তুমি আমার সঙ্গে এস। এই বলিয়া ব্রাহ্মণ প্রফুল্লকে সঙ্গে করিয়া আরও নিবিড়তর জঙ্গলের মধ্যে প্রবেশ করিল। প্রফুল্লের একটু একটু ভয় করিতে লাগিল, কিন্তু এ বনে কোথায় বা ভয় নাই ? দেখিল, সেখানে একখানি কুটার আছে—তালা চাবি বন্ধ, কেহ নাই। ব্রাহ্মণ তালা চাবি খুলিল। প্রফুল্ল দেখিল,-দোকান নয়, তবে হাড়ি, কলসী, চাল, দাল, মুন, তেল যথেষ্ট আছে। ব্রাহ্মণ বলিল, “তুমি যাহা এক বহিয়া লইয়া যাইতে পার, লইয়া যাও।” প্রফুল্ল যাহা পারিল, তাহা লইল। জিজ্ঞাসা করিল, “দাম কত দিতে হুইবে ?” ব্ৰা । এক আনি । প্র । আমার নিকট পয়সা নাই । ব্রা। টাকা আছে ? দাও, ভাঙ্গাইয়া দিতেছি। প্র । আমার কাছে টাকাও নাই । ব্রা। তবে কি নিয়া হাটে যাইতেছিলে ? প্র । একটি মোহর আছে। ব্রা । দেখি । প্রফুল্ল মোহর দেখাইল । ব্রাহ্মণ তাহ দেখিয়া ফিরাইয়া দিল ; বলিল, “মোহর ভাঙ্গাইয়া দিই, এত টাকা আমার কাছে নাই। চল, তোমার সঙ্গে তোমার ঘরে যাই, তুমি সেইখানে আমাকে পয়সা দিও।” প্র । ঘরেও আমার পয়সা নাই। ব্রা। সবই মোহর | তা হৌক, চল, তোমার ঘর চিনিয়া আসি। যখন তোমার হাতে পয়সা হইবে, তখন আমায় দিও। আমি গিয়া নিয়া আসিব । এখন “সবই মোহর” কথাটা প্রফুল্লের কানে ভাল লাগিল না। প্রফুল্ল বুঝিল যে, এ চতুর ব্রাহ্মণ বুঝিয়াছে যে, প্রফুল্লের অনেক মোহর আছে। আর সেই লোভেই তাহার বাড়ী দেখিতে যাইতে চাহিতেছে। প্রফুল্ল জিনিষপত্র যাহা লইয়াছিল, তাহ রাখিল। বলিল, “আমাকে হাটেই যাইতে হইবে। আমার কাপড়চোপড়ের বরাৎ আছে।” þr -
পাতা:দেবী চৌধুরানী - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/৫৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।