পাতা:দেশবন্ধু রচনাসমগ্র.pdf/৩৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাঙ্গলার কথা

আজ বাঙ্গালীর মগসভায় আমি বাঙ্গলার কথা বলিতে আসিয়াছি, আপনার আমাকে আহবান করিয়াছেন, আপনাদের আদেশ শিরোধার্য্য। আজ এই মিলনমন্দিরে আমার যোগ্যতা অযোগ্যতা লইয়া জটিল কুটিল অনেক প্রকারে বিচারের মধ্যে বিনাইয়া বিনাইয়া বিজয় প্রকাশ করিয়া আমার ও আপনাদের সময় অযথা নষ্ট করিব না। দেশের নায়ক হইবার অধিকারের যে। অহঙ্কার, তাছা আমার নাই, কিন্থ আমার বাজলাকে আমি আশৈশব সমস্ত প্রাণ দিয়া ভালবাসিয়াছি। যৌবনে সকল চেষ্টার মধ্যে অামার সকল দৈম্ব, সকল অযোগ্যতা অক্ষমতা সত্বেও অামার বাঙ্গালার যে মূৰ্ত্তি, তাহ) প্ৰাণে প্ৰাণে জাগাইয়! রাখিয়াছি, এবং আজ এই পরিণত বয়সে আমার মানসমন্দিরে সেই মোহিনী মুত্তি আরও জাগ্রত জীবস্ত হইয়া উঠিয়াছে। এই যে আশৈশব ও আজীবন অদ্ধা, ভক্তি, প্রেম ও ভালবাসা, তাহার অভিমান আমার আছে। সেই প্রেম জলস্ত প্রদীপের মত অামাকে পথ দেখাইয়া দিবে। আপনাদের সকলের সমবেত যে যোগ্যতা, তাহাই আমাকে আশ্ৰয় করিয়া আমাকে যোগ্য করিয়া তুলিবে।

সেই ভরসায় আজ আমি আপনাদের সম্মুখে বাঙ্গালীর কথা বলিতে আসিয়াছি। যে কথাগুলি অনেক দিন ধরিয়া আমার প্রাণে জাগিয়াছে, যে সব কথা জামার জৗবনের সকল রকমের চেষ্টা ও অভিজ্ঞতার মধ্যে অারও ডাল। করিয়া উপলব্ধি করিয়াছি, যে কথাগুলিকে সত্য বলিয়া জীবনের ধ্যান-ধারণার বিষয় করিয়াছি, সে সব কথাগুলি আপনাদের কাছে নিবেদন করিব। যাহা। সত্য বলির হৃদয়ঙ্গম করিয়াছি, তাহ প্রকাশ করিতে আমার কোন ভয় হয়। না। লজ্জা হয় না। হয় ত আমাদের শাসনকর্তাদের কাছে আমার অনেক কথা অপ্রিয় লাগবে, হয় ত আমার অনেক কথার সঙ্গে আপনাদের অনেকের মনের মিল হইবে না॥ কিন্তু “সত্যম্ ক্ৰয়াৎ প্রিয়ম ক্ৰয়াত ন ত্রয়া সত্যম অপ্ৰিয়ম” এই বচনের এমন অর্থ নহে যে, বাহা সত্য বলিয়া উপলব্ধি করিয়াছি, এবং . ঘাহ প্রকাশ করিবার জাবশ্যকতা আছেতাহ করিব না। সে ত কাপুরুষের কথা, দেশ-ভক্তের রীতি নহে। যে সত্য আমার হৃদয়েৰ মধ্যে জলিতেছে, যাহাকে চক্ষের সম্মুখে দেখিতে পাইতেছি, তাহাকে টাকিয়া ৰাখিতে হইলে যে পাটোয়ারী বুদ্ধির আাবহক, তাহ আমার নাই। আর নাই