পাতা:দেশবন্ধু রচনাসমগ্র.pdf/৩৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

দেশবন্ধ রচনাসমগ্র ' ' . মিলন কত প্রকারে হইতে পারে, তাহা বিচার করা যা’ক। আমাদের ও ইংরাজের মিলনের মর্ম যদি এই কয় যে, আমরা ইংরাজের ইতিহাসের সাহায্যে সেই ধাচে গড়িয়া উঠিব অর্থাৎ বাগলা দেশটা একটা নকল ইংলও হইবে, আযাদের নরনারী নকল সাহেব মেম হইয়া উঠিবে, আমাদের শিক্ষাপ্রণালী ঠিক হুবহু বিলাতের মত দুইবে, আমাদের চাষবাস ব্যবসা-বাণিজ্যের চেষ্টায় সমস্ত দেশটাই যথার্থ গৃস্থের আপ্রশ্ন না হইয়া একটা বৃহৎ ভীষণ কলের কায় খানা হইয়া উঠিবে, তাহা হইলে আমি বলি, মিলন একেবারে অসম্ভব h অনেকে হয় ত বসিবেন, কেন অসম্ভব ? এই সহরে ত অনেকেই ইংরাজী রকমে জীবন যাপন করেন। আহার . । বিহার, আচারে ব্যবহ৷ রে চালচলনে ইংরাজের সহিত তাহাদের কোন পার্থক্যই দেখা যায় না। । কলিকাতায় আমাদের ব্যবসা বাণিজ্য ত একরকম বিলাতের ছাঁচেই টালা, আর কলিকাতায় যাহা দেখা যায়, তাগি যে ক্রমশ: দেশে ছড়াইয়া। পড়িতেছে, তবে কেমন করিয়া বলা যায় যে, আমরা আমাদের বিলাতের ধাচে. গড়িয়া উঠিব না ? অামার কথা এই যে, নকল সাজা সহজ, কিন্তু যথার্থ নকল। হওয়া বড়ই কঠিন। সাজ। জিনিসটা খেয়ালের ব্যাপার, একদিন থাকে, তারু পর থাকে না ; কিন্তু হওয়া জিনিসটার সঙ্গে রক্তমাংসের সম্বন্ধ আছেকোন একটা জাতিকে কিছু হইতে হইলে তাহার স্বভাবধৰ্মে সেই হওয়া জিনিসটার বীজ থাকা চাই। আমার কিছুতেই মনে হয় না, বাঙ্গালীর স্বভাবধর্মের মধ্যে ইংলণ্ডের সভ্যতা ও সাধনার বীজ আছেসুতরাং এই অর্থে ইংরাজ ও: বাঙ্গালীর মিলন অসম্ভব, এবং এইভাবে দেখিতে গেলে Keeping এর কথাই ঠিক বলিয়া মনে হয়, প্রাচ্য প্রাচ্যই থাকিবে, প্রতীচ্য প্রতীচ্যই থাকিবেইহার" কখনও মিলিবে না। তবে কি এই দুইটা জাতি ভাঙ্গিয়া চুরিয়া নিজ নিজ সত্ব হারাইয়া একটা নূতন রকমের দোত্মাসল৷ জাতি গড়িয়া উঠিবে, না একটা নূতন বর্ণসঙ্কর জাতির উৎপত্তি হইবে ? এ কথ। অর্বাচীনের কথাইহার বিচারের কোন আবশ্যকত নাই। ভাষার কেহ কেহ বলেন যে, এই মিলনের অর্থ এই যে, ইংরাজের যাহা কিছু ভাল, আমরা লইব, জামাদের যাহ কিছু ভাল, তাহা ইংরাজ লইবে এবং উভয়ের যাহা কিছু মদ, তাহ৷ বিসৰ্জন কন্নিতে হইবে। এ কথার অর্থ আমি বুঝিতে পারি না। । আামাদের কি ইংরাজের যাহা ভাল, যাহ৷ মন, তাহা কি এখন পৃথকভাবে জাতিয় জীবনের মধ্যে অবস্থিতি করে যে, একটা একেবারে