পাতা:দ্বিতীয় চরিতাষ্টক - কালীময় ঘটক.pdf/১৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কবি মদনমোহন তর্কালঙ্কার।
১৯৩

ভয়ও হইয়াছিল। সর্ব্বদা প্রাণভয়ে শঙ্কিত থাকিতেন। যে দিন তাহাদের নিষ্কৃতির সম্বাদ পান, সেই দিন বলিয়াছিলেন,—“আজ আমার অর্ধমৃত্যু হইল।” তিনি এই সময় হইতে কর্ম্ম ছাড়িয়া দিবার সঙ্কল্প করেন। নানা কারণে প্রকৃতরূপে শান্তিরক্ষা করিবার যো নাই, তাঁহার মনে এই ভাবের উদয় হইয়াছিল। এই জন্য তিনি কর্ম্ম ছাড়িয়া কবিতা রচনা করিয়া জীবিকা নির্ব্বাহ করিবার সংকল্প করেন। কিন্তু এ সকল সঙ্কল্প কার্য্যে পরিণত হইবার পূর্ব্বেই তাঁহার মৃত্যু হয়। ঐ সময়ে কান্দীতে বিসুচিকা রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তিনি ঐ রোগে ১২৬৪ সালের (১৮৩৭ খৃঃ) ২৭ ফাল‍্গুন প্রাণত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি বিধবা পত্নী ও অনেক গুলি পুত্রকন্যা রাখিয়া যান। তাঁহার অভাগিনী জননী এতাদৃশ পুত্র যমের মুখে দিয়া আজও জীবিতা আছেন। তাঁহার পাঁচ কন্যা বর্ত্তমান। কন্যাগণের মধ্যে কেহ কেহ লেখাপড়া জানেন ও কবিতা লিখিতে পারেন।

 মদনমোহন তর্কালঙ্কার মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁহার পত্নীকে সম্বোধন করিয়া এই কয়টা কথা বলিয়াছিলেন,—“তুমি কেঁদোনা, তোমার চিরসহচর তোমায় ফেলিয়া পলায়ন করিতেছে বটে, কিন্তু তাহার প্রাণসখা ঈশ্বর[১] তোমায়


  1. শ্রীযুক্ত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়কে লক্ষ্য করিয়া।