পাতা:দ্বিতীয় চরিতাষ্টক - কালীময় ঘটক.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
চরিতাষ্টক

এই জন্য অফিসের পর সন্ধ্যাকালে গৃহে গমন করিয়া বরাবর স্ত্রীর নিকটে গেলেন এবং তিনি অত্যন্ত বাড়াবাড়ি করিয়াছেন বলিয়া ক্রোধভরে তাঁহাকে তিরস্কার করিতে লাগিলেন। ক্রোধের আতিশয্যে তিরস্কার করিতে ২ তাঁহাকে সৌভাগ্যের শণি বলিয়াছিলেন। গৃহিণী স্বামীকৃত পূর্ব্ব তিরস্কার সমস্ত সহ্য করিয়াছিলেন। কিন্তু “সৌভাগ্যের শণি” এটী তাঁহার সহ্য হইল না। কারণ তিনি বিশ্বাস করিতেন, তাঁহার ভাগ্যই, রামদুলালকে সিপ‍্সরকারের ঘৃণিত পদ হইতে তাদৃশ গৌরবান্বিত পদে উন্নত করিয়াছে। সুতরাং পূর্ব্বোক্ত তিরস্কার বাক্যটা তাঁহার অন্তরে ছুরিকাবিদ্ধ হইল। অবিলম্বে তাঁহার লোচনদ্বয় অশ্রুপূর্ণ হইল;—“আমি তোমার সৌভাগ্যের শণি?” অনুচ্চৈঃস্বরে পুনরাবৃত্তি করিয়া ক্রোধোন্মত্তার ন্যায় শয়ন গৃহে গিয়া দ্বার রুদ্ধ করিলেন।

 রামদুলাল পূর্ব্বোক্ত ঘটনায় যাদৃশ ক্রোধান্ধ হইয়াছিলেন, তাঁহার ৭৩ বৎসর পরিমিত দীর্ঘ জীবনের মধ্যে কখনই সেরূপ হয়েন নাই। যে বয়সে সামান্য লোকেরা স্বভাবতঃ ক্রোধন ও দুর্বৃত্ত হয়, রামদুলাল সে সময়ে সম্পূর্ণ বিনয়ী, কোমল ও সাধু স্বভাব ছিলেন। সর্ব্বপ্রকার গালির মধ্যে তিনি কেবল “মহাপাত্র”এই তিরস্কার বচনটী জানিতেন। কাহার প্রতি অত্যন্ত ক্রোধান্ধ হইলে তাহাকে “মহাপাত্র” বলিয়া গালি দিতেন। সুতরাং