পাতা:দ্বিতীয় চরিতাষ্টক - কালীময় ঘটক.pdf/৯৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গোবিন্দচন্দ্র চক্রবর্ত্তী।
৯১

তরুশিখরে অসামান্য প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব ও অসীম সাহসের পরিচয় দেন। পক্ষিশাবকের প্রত্যাশায় সন্ন্যাসীর সঙ্গে যথ তথা যাইতে সম্মত হওয়ায়, একদিকে যেমন বালকতা অন্যদিকে, তেমনি সাহস প্রকাশ পাইয়াছিল। তাঁহার বাল্য-জীবন পর্য্যালোচনা করিলে, কাহার না অন্তরে উৎসাহ-স্রোতঃ প্রবাহিত হয়? কাহার না, দুঃখের দশায় পড়িয়া অর্থোপার্জ্জ্বনের জন্য ঘর ছাড়িতে সাহস হয়? কাহার না পর প্রত্যাশী হইয়া মনুষ্য জীবনকে কলঙ্কিত করিতে ঘৃণা হয়? কাহারই বা আলস্যবশে বিবিধ বিড়ম্বনা ভোগ করিতে ইচ্ছা হয়?

 যে স্থলে পার্থক্য দ্বারা অনিষ্ট-সংঘটন হয়, অথবা ইষ্টোৎপত্তির ব্যাঘাত ঘটে, সেই স্থলে যিনি একীকরণের চেষ্টা করেন, তিনিই মহৎ। ইষ্টানিষ্টের লাঘব গৌরব অনুসারেই, মহত্ত্বের তারতম্য হইয়া থাকে। ধর্ম্ম, রাজ্য, জাতি, বর্ণ ইত্যাদির মধ্যগত বিভিন্নতাকে লক্ষ্য করিয়াই লাঘব গৌরবের কথা উত্থাপিত হইতেছে। ধর্ম্ম যে সৎসারের প্রধান বস্তু এবং উহার পার্থক্যে বিষম অনর্থ সংঘটিত হইতে পারে একথা সকলেই স্বীকার করিবেন। এইজন্যই খ্রীষ্ট, মহম্মদ, নানক, চৈতন্য প্রভৃতি ধর্ম্মসংস্কারকগণ সর্ব্বজাতীয় লোককে এক ধর্ম্মে আহ্বান করিয়া জগদ্বিখ্যাত হইয়াগিয়াছেন। তাঁহাদের ন্যায় ভক্তি ও সম্মান লাভ করিতে আর কে পারিয়াছেন?