>ヘ বৌদ্ধধৰ্ম্ম নীতিপ্রধান ধৰ্ম্ম । এই পুস্তকে সেই নীতি মূলক ধৰ্ম্মেরই শ্রেষ্ঠতা প্রতিপন্ন করা হইয়াছে। ইহার উপদেশগুলি সহজ, সরল ও হৃদয়স্পশী, ইহার মধ্যে দর্শনের জটিলতা বা ভাবের অস্পষ্টত। নাই । এই পুস্তকে গ্রথিত উপদেশ গুলি, সকল সম্প্রদায়ের উপযোগী । বুদ্ধদেবের মৃত্যুর অব্যবহিত পরে, প্রাচীন রাজগৃহের নিকটবৰ্ত্তী সপ্তপর্ণ গুহায় খৃঃ পূঃ ৪৭৭ শতাব্দীতে যে বৌদ্ধ মহাসমিতির অধিবেশন হয় তাহাতে বৌদ্ধ ত্রিপিটক গ্রন্থ প্রথম সংগৃহীত হয় ও ইহার একশত বৎসর পরে খৃঃ পূঃ ৩৭৭ শতাব্দীতে বৈশালী নগরীতে দ্বিতীয় বৌদ্ধ মহাসভায়, উহা পরিবদ্ধিত হইয়া বৰ্ত্তমান আকারে পরিণত হয় । ধৰ্ম্মপদ গ্রন্থ সেই ত্রিপিটকেরই একটী উৎকৃষ্ট অংশ । বৌদ্ধধৰ্ম্মের সারমন্ম সংক্ষেপে বুঝাইবার নিমিত্ত এই পুস্তকথানি সঙ্কলিত হইয়াছিল। ইহার প্রত্যেক শ্লোক বুদ্ধদেবের মুখ নিঃস্তত বাক্য 9ভিন্ন ভিন্ন সময়ে শ্রোতৃবর্গকে উপদেশছলে বুদ্ধদেব গল্প বলিতেন ও সেই গল্পের সারমন্মস্বরূপ ধৰ্ম্মপদের একটা শ্লোক উচ্চারণ করিতেন । ধৰ্ম্মপদ গ্রন্থখানি ষড়বিংশ অধ্যায়ে বিভক্ত । এক সময়ে নালন্দ, বিক্রমশিলা ও ওদন্তপুরীর ভিক্ষুসঙ্ঘ মধ্যে, বা নানা স্থানের পৰ্ব্বত কন্দরে, সংসার বিরাগী ভিক্ষু সম্প্রদায় সমস্বরে এই ধৰ্ম্মপদ গাথা আবৃত্তি করিতেন। এখন পর্যন্ত সিংহল হইতে সুদূর জাপান পর্য্যস্ত বৌদ্ধমাত্রেই ভক্তির সহিত এই গ্রন্থের নাম উচ্চারণ করিয়া থাকেন । ছয় বৎসর পূৰ্ব্বে পালি ভাষা অধ্যয়ন করিতে করিতে এই পুস্তকখানির মনোহারিত্ব দর্শনে মুগ্ধ হই ; তখনই এই পুস্তক খানি বঙ্গ ভাষায় অনুবাদ করিবার নিমিত্ত বাসনা হয় । কিন্তু নানা কার্য্যে বাপৃত থাকায় এত দিন অনুবাদ সম্পূর্ণ করিবার সুযোগ হয় নাই। প্রায় দুই বৎসর হইতে সাহিত্য সংহিতা পত্রিকায় খণ্ড খণ্ড ভাবে এই পুস্তক খানি প্রকাশিত হইয়াছে ও দ্বাবিংশ অধ্যায় পৰ্য্যন্ত ছাপা সম্পূর্ণ হইয়াছে।
পাতা:ধম্মপদ (চারু চন্দ্র বসু).djvu/২৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।