পাতা:ধর্ম্মজীবন (তৃতীয় খণ্ড) - শিবনাথ শাস্ত্রী.pdf/২৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

፯ዓ8 e-ure ধৰ্ম্মেও গুরুনিষ্ঠত আছে কিন্তু শাস্ত্র বা আচারনিষ্ঠাই তাঁহাদের প্রধান লক্ষণ । এই উভয়বিধ ধৰ্ম্মেই দুইটী ভ্ৰান্তি দেখা গিয়াছে; প্রথম জগৎ ও মানব সম্বন্ধে ভ্ৰান্ত ধারণা; দ্বিতীয় শাস্ত্র বা গুরুর অভ্রান্ততাবাদ। এই উভয় মূল হইতে সকল প্রকার ভ্রম ও কুসংস্কার অভূদিত হইয়াছে। প্ৰথম, উক্ত ধৰ্ম্ম সকলের পূর্বাচাৰ্য্যগণ এমন সকল প্রশ্ন ধৰ্ম্মের এলাকাভুক্ত । করিয়া লইয়াছিলেন যাহা ধৰ্ম্মের এলাকাভুক্ত নহে। দৃষ্টান্ত স্বরূপ উল্লেখ করা যাইতে পারে, যে সৃষ্টিতত্ত্বের সঙ্গে ধৰ্ম্মের ‘কোনও সম্বন্ধ নাই। এই পৃথিবী সাতদিনে হইয়াছে, কি সাত লক্ষ বৎসরে ক্রমে ক্ৰযে বিবৰ্ত্তিত হইয়াছে, তাহা বিজ্ঞানের গবেষণার বিষয় ; তাহার সহিত মানবাত্মার ভদ্রাভদ্রের সম্বন্ধ নাই। অথচ জগতের অনেক শাস্ত্ৰনিষ্ঠ ধৰ্ম্ম তাহাকে ধৰ্ম্মের এলাকাভুক্ত করিয়া লইয়াছেন। তাঁহাদের পূর্বাচাৰ্যগণ যেন মনে করিয়াছিলেন, এই জগৎ সম্বন্ধে মানব-হৃদয়ে যত প্ৰকার প্রশ্ন উঠতে পারে, সকলের সদুত্তর দেওয়া ধৰ্ম্মশাস্ত্রকারের কৰ্ত্তব্য। এই সংস্কারের বশবৰ্ত্তী হইয়া তাহারা সকল প্রশ্নের উত্তর দিবার চেষ্টা করিয়াছেন । ফল এই হইয়াছে, ধৰ্ম্মোপদেশের সহিত জগৎ ও মানব-সম্বন্ধীয় বিবিধ ভ্ৰান্ত মত সংমিশ্রিত হুইয়া গিয়াছে। গুরু ও শাস্ত্রের অভ্রান্ততাবাদ হইতেই ঐ প্রকার অনিষ্ট ফল । উৎপন্ন হইয়াছে; এক যুগের ভ্ৰম বহুবহু যুগ মানব-হৃদয়ে রাজত্ব করিতেছে ; এবং মানবের চিন্তার প্রসার বন্ধ করিয় রাখিয়াছে।