শঙ্ক। বড় কঠিন কথা। এইরূপ ঈশ্বরে চিত্ত নিৰিষ্ট করিতে গুরু। সকলেই পারে ; চেষ্টা করিলেই পারে। । শিস্য। কি প্রকারে চেষ্টা করিতে হইবে । - গুরু। ভগবান তাহাও অর্জুনকে বলিয়া দিতেছেন, অথ চিত্তং সমাধাতুং ন শক্লোষি ময়ি স্থিরম্। অভ্যাসযোগেন ততো মামিচ্ছাপ্ত ধনঞ্জয় ॥ ১২ । ৯ “হে অৰ্জ্জুন ! যদি আমাতে চিত্ত স্থির করিয়া রাখিতে না পার, তবে অভ্যাস যোগের দ্বারা আমাকে পাইতে ইচ্ছা কর।” অর্থাৎ যদি ঈশ্বরে চিত্ত স্থির রাখিতে না পার, তবে পুনঃপুনঃ চেষ্টার দ্বারা সেই কাৰ্য্য অভ্যস্ত করিবে । শিষ্য। অভ্যাস মাত্রই কঠিন, এবং এ গুরুতর অভ্যাস আরও কঠিন। সকলে পারে না। যাহারা না পারে, তাহারা কি করিবে ? গুরু। যাহার কৰ্ম্ম করিতে পারে, তাহারা যে কৰ্ম্ম ঈশ্বরোদ্দিষ্ট, বা ঈশ্বরামুমোদিত, সেই সকল কৰ্ম্ম সৰ্ব্বদা করিলে ক্রমে ঈশ্বরে মনস্থির হইবে। তাহাই ভগবান বলিতেছেন— অভ্যাসেইপ্যসমর্থোইসি মৎকৰ্ম্মপরমো ভব। মদৰ্থমপি কৰ্ম্মাণি কুৰ্ব্বন সিদ্ধিমবাপ্ৰস্তসি ॥ ১২ । ১০ “যদি অভ্যাসেও অসমর্থ হও, তবে মৎকৰ্ম্মপরায়ণ হও । আমার জন্ত কৰ্ম্ম সকল করিয়া সিদ্ধিপ্রাপ্ত হইবে।” শিষ্য। কিন্তু অনেকে কৰ্ম্মেও অপটু—বা অকৰ্ম্ম । তাহাদের উপায় কি ? গুরু। এই প্রশ্নের আশঙ্কায় ভগবান বলিতেছেন,— অথৈতদপ্যশক্তোহসি কৰ্ত্তং মদযোগমাশ্ৰিত: | সৰ্ব্বকৰ্ম্মফলত্যাগং ততঃ কুরু যতাত্মবান ॥ ১২ । ১১ “যদি মদাশ্রিত কৰ্ম্মেও অশক্ত হও, তবে যতাত্মা হইয়া সৰ্ব্বকৰ্ম্ম ফলত্যাগ কর।” শিষ্য। সে কি ? যে কৰ্ম্মে অক্ষম, যাহার কোন কৰ্ম্ম নাই, সে কৰ্ম্মফল ত্যাগ করিবে কি প্রকারে ? গুরু। কোন জীবই একেবারে কৰ্ম্মশূন্ত হইতে পারে না। যে স্বতঃ প্রবৃত্ত হইয় কুৰ্ম্ম না করে, ভূততাড়িত হইয়। সেও কৰ্ম্ম করিবে। এ বিষয়ে ভগবঢুক্তি পূৰ্ব্বে উদ্ধত কয় জন পারে।
পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।