ماه از করিয়াছি। যে কৰ্ম্মই ভদ্বারা সম্পন্ন হয়, যদি কৰ্ম্মকর্তা তাহার ফলাকাঙ্ক না করে, ডৰে । অন্ত কামনাভাবে, ঈশ্বরই একমাত্র কাম্য পদার্থ হইয়া দাড়াইবেন। তখন আপন৷ হইতেই o চিত্ত ঈশ্বরে স্থির হইবে । শিষ্য। এই চতুৰ্ব্বিধ সাধনই অতি কঠিন। আর ইহার কিছুতেই উপাসনার কোন প্রয়োজন দেখা যায় না । গুরু। এই চতুৰ্ব্বিধ সাধনই শ্রেষ্ঠ উপাসনা। ঈদৃশ সাধকদিগের পক্ষে অন্তবিধ উপাসনার প্রয়োজন নাই । শিষ্য। কিন্তু অজ্ঞ, নীচবৃত্ত, কলুষিত, বালক, প্রভৃতির এ সকল সাধন আয়ত্ত নহে। তাহারা কি ভক্তির অধিকারী নহে ? இ গুরু। এই সব স্থলে উপাসনাত্মিক গৌণ ভক্তির প্রয়োজন। গীতায় ভগবঢুক্তি ? আছে যে,— যে যথা মাং প্ৰপদ্যন্তে তাংস্তথৈব ভজাম্যহং “যে যে রূপে আমাকে আশ্রয় করে, আমি তাহাকে সেইরূপে ভজনা করি।” । এবং স্থানান্তরে বলিয়াছেন, পত্রং পুষ্পং ফলং তোয়ং যো মে ভক্ত্যা প্রযচ্ছতি । তদহং ভক্ত পহৃতমশ্মামি প্ৰযতাত্মনঃ। “যে ভক্তিপূর্বক আমাকে পত্র, পুষ্প, ফল, জল দেয়, তাহ প্ৰযতাত্মার ভক্তির উপহার বলিয়। আমি গ্রহণ করি।” শিষ্য। তবে কি গীতায় সাকার মূৰ্ত্তির উপাসনা বিহিত হইয়াছে ? গুরু । ফল পুষ্পাদি প্রদান করিতে হইলে, তাহা যে প্রতিমায় অর্পণ করিতে হইবে, এমন কথা নাই। ঈশ্বর সর্বত্র আছেন, যেখানে দিবে, সেইখানে তিনি পাইবেন। শিষ্য। প্রতিমাদির পূজা বিশুদ্ধ হিন্দুধৰ্ম্মে নিষিদ্ধ, না বিহিত ? গুরু। অধিকারী ভেদে নিষিদ্ধ, এবং বিহিত। তদ্বিষয়ে ভাগবত পুরাণ হইতে কপিলোক্তি উদ্ধত করিতেছি। ভাগবত পুরাণে কপিল, ঈশ্বরের অবতার বলিয়া গণ্য। তিনি র্তাহার মাতা দেবহুতীকে নিগুৰ্ণ ভক্তিযোগের সাধন বলিতেছেন। এই সাধনের মধ্যে এক দিকে, সৰ্ব্বভূতে ঈশ্বরচিন্তা, দয়া, মৈত্র, যম নিয়মাদি ধরিয়াছেন, আর এক দিকে প্রতিম দর্শন, স্পর্শন, পুজাদি ধরিয়াছেন। কিন্তু বিশেষ এই বলিতেছেন,—
পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১১৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।