একবিংশতিতম অধ্যায়।—ঐতি । st যতক্ষণ না বুঝিব যে সৰ্ব্বলোকে আর আমাতে অভেদ, ততক্ষণ আমার জ্ঞান হয় নাই, ধৰ্ম্ম হয় নাই, ভক্তি হয় নাই, প্রীতি হয় নাই। অতএব জাগতিক প্রীতি হিন্দুধর্মের মূলেই আছে, অচ্ছেদ্য, অভিন্ন, জাগতিক প্রতি ভিন্ন হিন্দুত্ব নাই। ভগবানের সেই মহাবাক্য পুনরুক্ত করিতেছি – সৰ্ব্বভূতস্থমাত্মানং সৰ্ব্বভূতানি চাত্মনি । ঈক্ষতে যোগযুক্তাত্মা সৰ্ব্বত্র সমদৰ্শনঃ ॥ যো মাং পশু্যতি সৰ্ব্বত্র সৰ্ব্বঞ্চ ময়ি পশুতি । তস্যাহং ন প্রণখ্যামি সচ মে ন প্ৰণশ্যতি |* “যে যোগযুক্তাত্ম হইয়া সৰ্ব্বভূতে আপনাকে দেখে এবং আপনাতে সৰ্ব্বভূতকে দেখে ও সৰ্ব্বত্র সমান দেখে, যে আমাকে সৰ্ব্বত্র দেখে, আমাতে সকলকে দেখে, আমি তাহার অদৃশ্ব হই না, সেও আমার অদৃশ্য হয় না।” স্থূল কথা, মনুষ্যে প্রতি হিন্দুশাস্ত্রের মতে ঈশ্বরে ভক্তির অন্তর্গত ; মমুষে প্রতি ভিন্ন ঈশ্বরে ভক্তি নাই ; ভক্তি ও প্রতি হিন্দুধৰ্ম্মে অভিন্ন, অভেদ্য, ভক্তিতত্ত্বের ব্যাখ্যাকালে ইহ দেখাইয়াছি ; ভগবদগীতা এবং বিষ্ণুপুরাণোক্ত প্রহ্নাদচরিত্র হইতে যে সকল বাক্য উদ্ধৃত করিয়াছি তাহাতে উহা দেখিয়াছ। প্রহ্নাদকে যখন হিরণ্যকশিপু জিজ্ঞাসা করিলেন যে, শত্রুর সঙ্গে রাজার কিরূপ ব্যবহার করা কৰ্ত্তব্য, প্রহ্নলাদ উত্তর করিলেন, “শত্রু কে ? সকলই বিষ্ণু-(ঈশ্বর )ময়, শক্র মিত্র কি প্রকারে প্রভেদ করা যায়।” প্রতিতত্ত্বের এইখানে একশেষ হইল। এবং এই এক কথাতেই সকল ধৰ্ম্মের উপর হিন্দুধর্মের শ্রেষ্ঠতা প্রতিপন্ন হইল বিবেচনা করি। প্ৰহলাদের সেই সকল উক্তি এবং গীত হইতে যে সকল বাক্য উদ্ধৃত করিয়াছি তাহ পুনৰ্ব্বার স্মরণ কর। স্মরণ না হয় গ্রন্থ হইতে পুনর্বার অধ্যয়ন কর। তদ্ব্যতীত হিন্দুধৰ্ম্মোক্ত প্রীতিতত্ত্ব বুঝিতে পারিবে না। এই প্রতি জগতের বন্ধন, এই প্রতি ভিন্ন জগৎ বন্ধনশূন্ত বিশৃঙ্খল জড়পিও সকলের সমষ্টি মাত্র। প্রতি না থাকিলে পরস্পর বিদ্বেষপরায়ণ মনুষ্য জগতে বাস করিতে অক্ষম হইত, অনেক কাল হয়ত পৃথিবী মনুষ্যশৃষ্ঠ, নয় মনুষ্ক লোকের অসহ নরক হইয়া উঠিত। ভক্তির পর ঐতির
- এই ধৰ্ম্ম বৈদিক । বাজসনেয় সংহিতোপনিষদে আছে—
- বস্তু সৰ্ব্বাশি ভূতান্তাত্মান্তেবানুপগুঠি । সৰ্ব্বভূতেষু চাক্মালম্ভতোম বিজুগুপসতে। বস্মিন সর্বাণি ভূতান্তাত্মৈবাভূদ্বিজাণত, তত্ৰ ক মোহ: ক শোক একত্বসমুপন্ততঃ।