ধৰ্ম্মতত্ত্ব । بهد ইহা হইতে একটি গুরুত্তর তত্ত্ব উপলব্ধ হয়। অপত্যাদির রক্ষার্থ আপনার প্রাণ বিসর্জন করা ধৰ্ম্মসঙ্গত। পূৰ্ব্বে যে কথা আন্দাজি বলিয়াছিলাম, এক্ষণে তাহ প্রমাণীকৃত छ्हेल । । - . | ; ইহ পশু পক্ষাতেও করিয়া থাকে। ধৰ্ম্মজ্ঞানবশতঃ তাহার এরূপ করে, এমন বলা যায় না। অপত্যপ্রীতি স্বাভাবিক বৃত্তি, এই জন্য ইহা করিয়া থাকে। অপত্যস্নেহ যদি স্বতন্ত্র স্বাভাবিক বৃত্তি হয়, তবে তাহ সাধারণ প্রতিবৃত্তির বিরোধী হুইবার সম্ভাবনা । অনেক সময়ে হইয়াও থাকে। অনেক সময়েই দেখিতে পাই যে, অনেকে অপত্যস্নেহের বশীভূত হইয়া পরের অনিষ্ট করিতে প্রবৃত্ত হয়। যেমন জাগতিক ঐতির সঙ্গে আত্মপ্রতির বিরোধ সম্ভাবনার কথা পূৰ্ব্বে বলিয়াছিলাম, জাগতিক ঐতির সঙ্গে অপত্যপ্রীতিরও সেইরূপ বিরোধের শঙ্কা করিতে হয়। । - - কেবল তাহাই মহে। এখানে যে আত্মপ্রীতি আসিয়া যোগ দেয় না, এমন কথা বলা যায় না। ছেলে আমার, স্বতরাং পরের কাড়িয়া লইয়া ইহাকে দিতে হইবে। ছেলের । উপকারে, অামার উপকার, অতএব যে উপায়ে হউক, ছেলের উপকার সিদ্ধ করিতে হইবে। এরূপ বুদ্ধির বশীভূত হইয়। অনেকে কাৰ্য্য করিয়া থাকেন। । অতএব এই অপত্যপ্রীতির সামঞ্জস্যজস্য বিশেষ সতর্কতার প্রয়োজন । শিষ্য। এই সামঞ্জস্যের উপায় কি ? গুরু। উপায়—হিন্দুধর্মের ও প্রতিতত্ত্বের সেই মূলসূত্র—সৰ্ব্বভূতে সমদৰ্শন। অপত্যপ্রতি সেই জাগতিক প্রীতিতে নিমজ্জিত করিয়া, অপত্যপালন ও রক্ষণ ঈশ্বরোদিষ্ট ; সুতরাং অমুষ্ঠেয় কৰ্ম্ম জানিয়া, “জগদীশ্বরের কৰ্ম্ম নির্বাহ করিতেছি, আমার ইহাতে ইষ্টানিষ্ট কিছু নাই,” ইহা মনে বুঝিয়া, সেই অমুষ্ঠেয় কৰ্ম্ম করিবে। তাহ হইলে এই অপত্যপালন ও রক্ষণধৰ্ম্ম নিষ্কামধৰ্ম্মে পরিণত হইবে। তাহা হইলে তোমার অমুষ্ঠেয় কৰ্ম্মেরও অতিশয় মুনিৰ্ব্বাহ হইবে ; অথচ তুমি নিজে এক দিকে শোকমোহাদি, আর এক দিকে পাপ ও দুৰ্ব্বাসনা হইতে নিস্কৃতি পাইবে। শিষ্য। আপনি কি অপত্যস্নেহ-বৃত্তির উচ্ছেদ করিয়া তাহার স্থানে জাগতিক প্রীতির সমাবেশ করিতে বলেন ? hy গুরু । আমি কোন বৃত্তিরই উচ্ছেদ করিতে বলি না ইহা পুনঃ পুনঃ বলিয়াছি। তবে, পাশববৃত্তি সম্বন্ধে যাহা বলিয়াছি, তাহা স্মরণ কর। পাশববৃত্তি সকল স্বতঃস্ফূৰ্ত্ত । যাহা স্বতঃস্ফূর্ত, তাহার দমনই অনুশীলন। অপত্যস্নেহ, পরম রমণীয় ও পবিত্র বৃত্তি।
পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৩৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।