পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই মনোনামযুক্ত বৃত্তিগুলির ক্ষুৰ্ত্তিই বিশেষ প্রয়োজনীয়। এখন এই সন্ধ্যাপ চিৎকে জানিবে কি প্রকারে ? : . . . . . .” - - - --- শিষ্য। সেও অনুমানের দ্বার। ... - o গুরু। ঠিক তাহা নহে। যাহাকে বুদ্ধি বা বিচারিকা বৃত্তি বলা হইয়াছে, তাহার অনুশীলনের দ্বারা । অর্থাৎ সৎকে জানিতে হইবে জ্ঞানের দ্বারা এবং চিংকে জানিৰে ধ্যানের দ্বারা । তার পর আনন্দকে জানিবে কিসের দ্বারা ? শিম্ভ। ইহা অনুমানের বিষয় নহে, অমুভবের বিষয়। আমরা আনন্দ অনুমান, করি না—অনুভব করি, ভোগ করি। অতএব আনন্দ জ্ঞানার্জনীবৃত্তির অপ্রাপ্য। অঞ্জ ইহার জন্য অন্ত জাতীয় বৃত্তি চাই । গুরু । সেইগুলি চিত্তরঞ্জিনীবৃত্তি । তাহার সম্যক অনুশীলনে এই সচ্চিদানন্দময় জগৎ এবং জগন্ময় সচ্চিদানন্দের সম্পূর্ণ স্বরূপানুভূতি হইতে পারে। তদ্ব্যতীত ধৰ্ম্ম অসম্পূর্ণ। তাই বলিতেছিলাম যে, চিত্তরঞ্জিনীবৃত্তির অনুশীলন অভাবে ধৰ্ম্মের হানি হয়। আমাদের সর্বাঙ্গসম্পন্ন হিন্দুধর্মের ইতিহাস আলোচনা করিলে দেখিতে পাইবে যে, ইহার যত পরিবর্তন ঘটিয়াছে, তাহ কেবল ইহাকে সৰ্ব্বাঙ্গসম্পন্ন করিবার চেষ্টার ফল। ইহার প্রথমাবস্থ ঋগ্বেদসংহিতার ধৰ্ম্ম আলোচনায় জানা যায়। যাহা শক্তিমান, বা উপকারী, বা সুন্দর, তাহারই উপাসনা এই আদিম বৈদিক ধৰ্ম্ম । তাহাতে আনন্দভাগ যথেষ্ট ছিল, কিন্তু সতের ও চিতের উপাসনার, অর্থাৎ জ্ঞান ও ধ্যানের অভাব ছিল । এই জস্ত কালে তাহ। উপনিষদ সকলের দ্বারা সংশোধিত হইল। উপনিষদের ধৰ্ম্ম—চিন্ময় পরব্রহ্মের উপাসনা । তাহাতে জ্ঞানের ও ধ্যানের অভাব নাই । কিন্তু আনন্দাংশের অভাব আছে। ব্ৰহ্মানন্দপ্রাপ্তিই উপনিষদ সকলের উদ্দেশু বটে, কিন্তু চিত্তরঞ্জিনীবৃত্তি সকলের অনুশীলন ও ফুৰ্ত্তির পক্ষে সেই জ্ঞান ও ধ্যানময় ধৰ্ম্মে কোন ব্যবস্থা নাই। বৌদ্ধ ধৰ্ম্মে উপাসনা নাই । বৌদ্ধের সৎ মানিতেন না। এবং তাহদের ধৰ্ম্মে আনন্দ ছিল না। এই তিন ধর্মের একটিও সচ্চিদানন্দপ্রয়াসী হিন্দুজাতির মধ্যে অধিক দিন স্থায়ী হইল না। এই তিন ধৰ্ম্মের সারভাগ গ্রহণ করিয়া পৌরাণিক হিন্দুধৰ্ম্ম সংগঠিত হইল। তাছাতে সতের উপাসন, চিতের উপাসনা এবং আনন্দের উপাসনা প্রচুর পরিমাণে আছে। বিশেষ আনন্দভাগ বিশেষরূপে ফুৰ্ত্তি প্রাপ্ত হইয়াছে। ইহাই জাতীয় ধৰ্ম্ম হইবার উপযুক্ত, এবং এই কারণেই সর্বাঙ্গসম্পন্ন হিন্দুধৰ্ম্ম অন্ত কোন অসম্পূর্ণ ৰিজাতীয় ধৰ্ম্ম কর্তৃক স্থানচ্যুত বা বিজিত হইতে পারে নাই। এক্ষণে র্যাহারা ধৰ্ম্মসংস্কারে প্রবৃত্ত, তাহাদের স্মরণ রাখ