পাতা:ধর্ম্মতত্ত্ব-বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.djvu/১৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ক্রোড়পত্র। খ। । t - এক সম্প্রদায়ের মত। লৌগাক্ষি ভাস্কর প্রভৃতি এইরূপ কহিয়াছেন যে “বেদপ্রতিপাদ্যপ্রয়োজনবদর্থে ধৰ্ম্মঃ ” এই সকল কথার পরিণাম ফল এই দাড়াইয়াছে যে, ষাগাদিই ধৰ্ম্ম এবং সদাচারই ধৰ্ম্ম শব্দে বাচ্য হইয়া গিয়াছে—যথা মহাভারতে - w ... " " ' ' ... or " শ্রদ্ধা কৰ্ম্ম তপশ্চৈব সত্যমক্রোধ এবচ । স্বেষু দারেষু সন্তোষ শৌচং বিস্তানস্থয়িতা ॥ আত্মজ্ঞানং তিতিক্ষণ চ ধৰ্ম্মঃ সাধারণে নৃপ । কেহ বা বলেন, “দ্রব্যক্রিয়গুণাদীনাং ধৰ্ম্মত্বং” এবং কেহ বলেন, ধৰ্ম্ম অদৃষ্ট বিশেষ । ফলত আৰ্য্যদিগের সাধারণ অভিপ্রায় এই যে, বেদ বা লোকাচার সম্মত কাৰ্য্যই ধৰ্ম্ম, যথা বিশ্বামিত্র- - যমাৰ্য্যা: ক্রিয়মাণং হি শং সস্ত্যাগমবেদিন । সধৰ্ম্মো যং বিগহঁস্তি তমধৰ্ম্মং প্রচক্ষতে ॥ কিন্তু হিন্দুশাস্ত্রে যে ভিন্ন মত নাই, এমত নহে। “দ্ধে বিদ্যে বেদিতব্যে ইতি হ স্ম যা ব্রহ্মবিদে বদস্তি পরা চৈবাপরাচ,” ইত্যাদি শ্রীতিতে সুচিত হইয়াছে যে, বৈদিক জ্ঞান ও তদনুবৰ্ত্তী যাগাদি নিকৃষ্ট ধৰ্ম্ম, ব্ৰহ্মজ্ঞানই পরমধৰ্ম্ম । ভগবদগীতার স্কুল তাৎপৰ্য্যই কৰ্ম্মাত্মক বৈদিকাদি অনুষ্ঠানের নিকৃষ্টতা এবং গীতোক্ত ধৰ্ম্মের উৎকর্ষ প্রতিপাদন। বিশেষত হিন্দুধৰ্ম্মের ভিতর একটি পরম রমণীয় ধৰ্ম্ম পাওয়া যায়, যাহা এই মীমাংসা এবং তন্নীত হিন্দুধৰ্ম্মবাদের সাধারণত বিরোধী। যেখানে এই ধৰ্ম্ম দেখি—অর্থাৎ কি গীতায়, কি মহাভারতের অন্যত্র, কি ভাগবতে—সৰ্ব্বত্রই দেখি, শ্ৰীকৃষ্ণই ইহার বক্তা। এই জন্য আমি হিন্দুশাস্ত্রে নিহিত এই উৎকৃষ্টতর ধৰ্ম্মকে শ্ৰীকৃষ্ণ-প্রচারিত মনে করি, এবং কৃষ্ণোক্ত ধৰ্ম্ম বলিতে ইচ্ছা করি। মহাভারতের কর্ণপৰ্ব্ব হইতে একটি বাক্য উদ্ধত করিয়া উহার উদাহরণ দিতেছি ।

  • অনেকে শ্রতিরে ধৰ্ম্মের প্রমাণ বলিয়া নির্দেশ করেন। আমি তাহাতে দোষারোপ করি না। কিন্তু শ্ৰুতিতে সমুদায় ধৰ্ম্মতত্ত্ব নির্দিষ্ট নাই। এই নিমিত্ত অনুমান দ্বারা অনেক স্থলে ধৰ্ম্ম নির্দিষ্ট করিতে হয়। প্রাণীগণের উৎপত্তির নিমিত্তই ধৰ্ম্ম নির্দেশ করা হইয়াছে। অহিংসাযুক্ত কাৰ্য্য করিলেই ধৰ্ম্মানুষ্ঠান করা হয়। হিংস্ৰকদিগের হিংসা নিবারণার্থেই ধৰ্ম্মের সৃষ্টি হইয়াছে। উহা প্রাণীগণকে ধারণ করে বলিয়াই ধৰ্ম্ম নাম নির্দিষ্ট হইতেছে। অতএব যদ্বারা প্রাণীগণের রক্ষ হয়, তাহাই ধৰ্ম্ম” ইহা কৃষ্ণোক্তি। ইহার পরে বনপৰ্ব্ব হইতে ধৰ্ম্মব্যাধোক্ত ধৰ্ম্মব্যাখ্যা উদ্ধত করিতেছি। “যাহা সাধারণের একান্ত হিতজনক