পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৮
ধুস্তুরী মায়া

দাম্পত্য যখন হবার নয় তখন দু নম্বরের চেষ্টা করলে দোষ কি? আমার অনেক আত্মীয় তো স্ত্রীর বশে বেশ সুখে আছে। স্ত্রৈণতাও সংসারযাত্রার একটি মার্গ। জগতে কর্তাভজা বিস্তর আছে, তারা বিচারের ভার কর্তার ওপর ছেড়ে দিয়ে দিব্যি নিশ্চিন্ত হয়ে থাকে। যা করেন গুরুমহারাজ, যা করেন পণ্ডিতজী, যা করেন কমরেড স্তালিন আর মাও-সে-তুং। তেমনি গিন্নীভজাও অনেক আছে। তারা বলে, আমার মতামতের দরকার কি, যা করেন গিন্নী।

 —কিন্তু আপনার স্বভাব যে অন্য রকম, আপনার পক্ষে গিন্নীভজা হওয়া অসম্ভব।

 —অবস্থাগতিকে বা সাধনার ফলে অসম্ভবও সম্ভব হয়। একটি সার সত্য আপনাকে বলছি শুনুন। যে নারী রাজার রানী হয়, বড়লোকের স্ত্রী হয়, নামজাদা গুণী লোকের গৃহিণী হয়, সে নিজেকে মহাভাগ্যবতী মনে করে, অনেক সময় অহংকারে তার মাটিতে পা পড়ে না। কিন্তু রানীকে বা টাকাওয়ালী মেয়েকে যে বিয়ে করে, কিংবা যার স্ত্রী মস্ত বড় দেশনেত্রী লেখিকা গায়িকা বা নটী, এমন পুরুষ প্রথম প্রথম খুব সংকুচিত হয়ে থাকে। সে স্বনামধন্য নয়, স্ত্রীর নামেই তার পরিচয়, লোকে তাকে একটু অবজ্ঞা করে। কিন্তু কালক্রমে তার সয়ে যায়, ক্ষোভ দূর হয়, সে খাঁটী স্ত্রৈণ হয়ে পড়ে। এর দৃষ্টান্ত জগতে অনেক আছে।

 —আপনিও সে রকম হতে চেষ্টা করেছিলেন নাকি?

 —করেছিলুম। কুইন ভিক্টোরিয়া, সারা বার্নহার্ড, ভার্জিনিয়া উল্‌ফ বা সরোজিনী নাইডুর মতন পত্নী যোগাড় করা অবশ্য আমার সাধ্য নয়, কিন্তু যদি একজন বেশ জবরদস্ত নামজাদা মহিলার কাছে চোখ কান বুজে আত্মসমর্পণ করতে পারি তবে হয়তো দু নম্বর