পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
ধুস্তুরী মায়া

রাগ হল। সাতটা বাড়ি আমি নিজে তৈরি করিয়েছি, কোনও ওভারশিয়ারের চাইতে আমার জ্ঞান কম নয়, আর আজ এই সত্যভামা আমাকে শেখাতে এসেছে!

 —আপনার কিন্তু রাগ হওয়া অন্যায়, আপনি তো আত্মসমর্পণ করতেই চেয়েছিলেন। দু নম্বর দাম্পত্যে স্বামীকে স্ত্রীর উপদেশ শুনতেই হয়।

 —তা ঠিক, কিন্তু হঠাৎ অনভ্যস্ত উপদেশ একটু অসহ্য বোধ হয়েছিল। তখনকার মতন সামলে নিলুম, কিন্তু পরে আবার গোল বাধল। রাত্রে হোটেলে এক টেবিলে খেতে বসেছি। সত্যভামা বললে, দেখুন মিস্টার নন্দী, আপনার খাওয়া মোটেই সায়েণ্টিফিক নয়, মাছ মাংস ডিম টোমাটো ক্যারট লেটিস এইসব খাওয়া দরকার, যা খাচ্ছেন তাতে ভাইটামিন কিচ্ছু নেই। এবারে আর চুপ করে থাকতে পারলুম না। ক্যালরি প্রোটিন অ্যামিনো অ্যাসিড আর ভাইটামিনের হাড় হদ্দ আমার জানা আছে, তার বৈজ্ঞানিক তথ্য আমি গুলে খেয়েছি, আর এই মাষ্টারনী আমাকে লেকচার দিচ্ছে! রাগের বশে একটা অসত্য কথা বলে ফেললুম— দেখুন মিস সত্যভামা, ভাইটামিন আমার সয় না। সত্যভামা বললে, সয় না কি রকম! উত্তর দিলুম, না, একদম সয় না, ডাক্তার বারণ করেছে। সত্যভামা ঘাবড়ে গিয়ে চুপ মেরে গেল।

 —আপনার ধৈর্য দেখছি বড়ই কম।

 —সেই তো হয়েছে বিপদ, উপদেশ আমার বরদাস্ত হয় না। তার চার দিন পরে যা হল একবারে চূড়ান্ত। বিকেলে সমদ্রের ধারে বসে সূর্যাস্ত দেখছি, শুধু আমি আর সত্যভামা, ভূপেন বোধ হয় ইচ্ছে করেই আসে নি। সত্যভামা হঠাৎ বললে, ওহে অক্রূর, তুমি গোঁফ-দাড়িটা কালই কামিয়ে ফেল, ওতে তোমাকে মানায় না,