পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বদন চৌধুরীর শোকসভা
১১১

 মানুষের শরীরের মধ্যে যেটুকু ফাঁক আছে তাতে একটা আত্মা কোনও গতিকে থাকতে পারে, কিন্তু একসঙ্গে দুটো আত্মার জায়গা নেই। ঘনশ্যাম ঢুকে পড়ায় গোবর্ধনবাবুর নিজের আত্মাটি কোণঠাসা হয়ে গেল, তাকে দাবিয়ে রেখে ঘনশ্যামের প্রেতাত্মা তারস্বরে বক্তৃতা শত্রুর করলে।—

 ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, আমার বেশী কিছু বলবার নেই। শেষের বেঞ্চের ওই ভদ্রলোকটি যা বলেছেন তা খুব খাঁটী কথা। বদন চৌধুরীকে আমরা বিলক্ষণ জানতুম। যত দিন বেঁচে ছিল তত দিন সে নিজের ঢাক নিজে পিটেছে। এখন সে মরেছে, তবু আমরা রেহাই পাই নি। তার খোশামুদে আত্মীয় স্বজন তাকে দেবতা বানাবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু এখন আর ধাপ্পাবাজি চলবে না। বদন স্বর্গে যায় নি, নরকেই গেছে। অমন জোচ্চোর ছ্যাঁচড় হারামজাদা লোক আর হবে না মশাই, কত মক্কেলের সর্বনাশ করেছে, করপোরেশনে আর অ্যাসেম্‌ব্লিতে থাকতে হাজার হাজার টাকা ঘুষ খেয়েছে, পারমিটে আর কালোবাজারে লক্ষ লক্ষ টাকা—

 বদন চৌধুরী চুপ করে থাকতে পারলেন না। যমদূত কাকজঙ্ঘকে এক ধাক্কায় সরিয়ে দিয়ে তিনি অধ্যাপক আঙ্গিরস গাঙ্গুলীর শরীরে ভর করলেন। দ্বিতীয় মাইকটা টেনে নিয়ে চিৎকার করে বললেন, আপনারা বুঝতেই পারছেন যে আমাদের মাননীয় সভাপতি মশাই প্রকৃতিস্থ হয়ে নেই। যে লোকটা পুণ্যশ্লোক রাজর্ষি বদনচন্দ্রের ঘোর শত্রু ছিল, সেই নটোরিয়স কাগজী গুণ্ডা কালকেতু-সম্পাদক ঘনা ঘোষালের প্রেতই সভাপতির ঘাড়ে চেপেছে এবং এই অসহায় গোবেচারা ভদ্রলোকের মুখে দিয়ে অশ্রাব্য কথা বলছে—

 সভাপতির জবানিতে ঘনশ্যাম বললেন, একবারে ডাহা মিথ্যে