পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১২
ধুস্তুরী মায়া

কথা। সেই বজ্জাত বদনার ভূতই আমাদের শ্রদ্ধেয় অধ্যাপক আঙ্গিরস গাঙ্গুলী মশাইকে কাবু করে যা-তা বলছে—

 আঙ্গিরস গাঙ্গুলীর মারফত বদন চৌধুরী বললেন, আপনারা কি সেই ব্ল্যাকমেলার শয়তান ঘনা ঘোষালকে ভুলে গেছেন? ব্যাটা টাকা খেয়ে তার কাগজে কালোবাজারী চোরদের প্রশংসা ছাপত, না পেলে গাল দিত। মন্ত্রীদের ভয় দেখিয়ে সে নিজের ওআর্থলেস ছেলে মেয়ে শালা শালীদের জন্যে ভাল ভাল চাকরি যোগাড় করেছিল। স্বর্গত মহাত্মা বদন চৌধুরী তাকে ঘুষ দেন নি সেই রাগে ঘনা ঘোষালের ভূত আজ নরককুণ্ডু থেকে উঠে এসে এখানে কুৎসা রটাচ্ছে। ওর দুর্গন্ধে সভা ভরে গেছে, টের পাচ্ছেন না? ভূতের কথায় কান দেবেন না আপনারা।

 সভায় তুমুল কোলাহল উঠল। একজন ষণ্ডা গোছের লোক একটা চেয়ারের উপর দাঁড়িয়ে বললে, ভূত টুত গ্রাহ্য করি না মশাই, আমার নাম রামলাল সিংগি। ভূত আমার সম্বন্ধী, শাঁকচুন্নী আমার শাশুড়ী। আসল কথা কি জানেন—আমাদের গোবর্ধনবাবু আর আঙ্গিরসবাবু খুব মহাশয় লোক, কিন্তু দুজনেই বেশ টেনে এসেছেন, নেশায় চুচ্চুরে হয়ে বক্তিমে করছেন। বদন চৌধুরী মরেছে, সবাই মিলে শোকসভা করছিল, এ তো বহুত আচ্ছা। তোরা গান শনবি, নাচ দেখবি, দুটো হা-হুতোশ করবি, বক চাপড়ে কেঁদে ভাসিয়ে দিবি, আউর ভি আচ্ছা। কিন্তু একি কাণ্ড, দু হাজার লোকের সামনে মাতলামি করছিস! আরে ছ্যা ছ্যা। আমরা যা করি নিজের আড্ডায় করি, সভায় দাঁড়িয়ে এমন বেলেল্লাপনা করি না। হাঁ মশাই, হক কথা বলব।

 এই সময়ে দুই যমদূত গোবর্ধন মিত্র আর আঙ্গিরস গাঙ্গুলীর কানে কানে বললে, বেরিয়ে এস শীগ্‌গির, দু ঘণ্টা কাবার হয়েছে।