পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রটন্তীকুমার
১৩১

গুণে বিদ্যায় টাকায় এমন পাত্র দুর্লভ, মানিকের মা তাকে জামাই করবার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন। সম্প্রতি তাঁর বড় ছেলে পানুর সঙ্গে খগেনের আলাপ হয়েছে, মায়ের অনুরোধে পানু তার বড়লোক বন্ধুকে ধরে এনেছে।

 চায়ের টেবিলে ছ জন বসেছেন—প্রধান অতিথি খগেন, প্রধান আকর্ষণ রুবি, প্রধান বক্ত্রী তার মা, দুই ভাই পানু আর মানিক, এবং মানিকের বন্ধু রটাই। বাড়ির কর্তা অনেক দেরিতে অফিস থেকে ফিরবেন, তাঁর জন্য অপেক্ষা করতে বারণ করেছেন।

 যথারীতি হালকা আলাপ আর অকারণ হাসি চলতে লাগল। রুবি গোটাকতক গান গাইলে। তার মা বললেন, জান বাবা খগেন, ইনফুলুএঞ্জা হবার পর থেকে রুবির গলাটা একটু ধরে গেছে, নইলে বুঝতে কি চমৎকার গায়। রীতিমত ওস্তাদের কাছে শেখা কিনা। এই ছবিটি দেখ, রুবি এঁকেছে। নাম দিয়েছে—মত্ত দাদুরী। আকাশে ঘনঘটা, সরোবর জলে টইটুম্বুর, তাতে রক্ত করবী ফুটেছে—

 রুবি বললে, রক্ত কুমদ।

 —হ্যাঁ হ্যাঁ, রক্ত কুমুদ ফুটেছে। সরোবরের তীরে সারি সারি দাদুরীরা সব বসে আছে, গলা ফুলিয়ে প্রাণপণে ডাকছে, তাদের ছাতি যাওত ফাটিয়া। অবনী ঠাকুরকে দেখাবার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু তিনি রইলেন না তো। আর এই দেখ, কি সব সুন্দর সুন্দর বুনেছে। এই টেবিল ক্লথটি হচ্ছে অজণ্টা প্যাটারেন, চারিদিকে পদ্মফুল আর মধ্যিখানে একটি মুরগি। খুব এক্‌সেলেণ্ট করেছে না? ওরে পানু, খগেনের ছাতির মাপটা নে তো, রুবি ওর জন্যে একটা ভেস্ট বুনে দেবে। জান খগেন, সবাই বলছে, মেয়ের যখন অত রূপ তখন মিস ইণ্ডিয়া কম্‌পিটিশনে দাঁড়াচ্ছে না কেন। আমার