কিছু দূর গিয়েই সে দেখতে পেলে, একটি ছেলে টিফিন ক্যারিয়ার হাতে নিয়ে চলেছে। গাড়ি থামিয়ে খগেন ডাকল, ও খোকা! রটাই থমকে দাঁড়িয়ে বললে, আমাকে ডাকছেন?
—হ্যাঁ হ্যাঁ। তোমার নাম কি ভাই?
—রটাই।
—এস, গাড়িতে ওঠ, তোমাকে বাড়ি পৌঁছে দেব।
রটাই উঠে বসল। খগেন বললে, তুমি বুঝি খুব রটিয়ে বেড়াও তাই রটাই নাম?
রটাই উত্তর দিলে, দূর, তা কেন। আমার ভাল নাম শ্রীরটন্তীকুমার রায়চৌধুরী, আমি রটন্তীপূজোর দিন জন্মেছিলুম কিনা তাই আমার দাদামশাই ওই নাম রেখেছেন। আর বড়দির নাম জয়ন্তীমঙ্গলা, ছোড়দির নাম প্রত্যঙ্গিরা।
—উঃ, তোমাদের খুব জাঁকালো নাম দেখছি। বাড়ি কত দূরে? কোন ক্লাসে পড়? বাড়িতে কে কে আছেন?
রটাই জানালে, তার বাড়ি বেশী দূরে নয়। সে ক্লাস সিক্সে পড়ে। বাবা রেলে কাজ করেন, বাইরে ঘুরে বেড়াতে হয়, মাঝে মাঝে আসেন। বাড়িতে আছেন তার মা, দুই দিদি আর সে নিজে। দিদিদের এখনও বিয়ে হয় নি। তা ছাড়া ভুঁদো কুকুর আর রূপুসী বেরাল আছে। ভুঁদোটা ভীষণ লোভী, সেদিন মালপো চুরি করে খেয়েছিল। কিন্তু রূপুসী হচ্ছে ভদ্র মহিলা, খেতে না বললে খায় না। শীঘ্রই তার বাচ্চা হবে, খগেনের যদি দরকার থাকে তবে যতগুলো ইচ্ছে নিতে পারে।
রটাই মোটেই লাজুক নয়, অপরিচয়ের জন্য যেটুকু সংকোচ ছিল