আরও সহজ, দাড়িতে তিন বার বুড়ো আঙুল ঠেকিয়ে বলতে হয়—আড়ি আড়ি আড়ি।
—খাসা নিয়ম। তোমার রুবি-দির সঙ্গে ওই রকমে ভাব হতে পারে, তিনি মুখিয়ে আছেন কিনা। কিন্তু তোমার জয়ন্তীমঙ্গলা দিদিমণিটি অন্য রকমের, পিঠ চাপড়ে ভাব করা যাবে না। তাঁর মতন রমণীর মন সহস্র বর্ষেরই সখা সাধনার ধন। যা হক, আমি চেষ্টা করে দেখব। কিন্তু হাজার বছর সাধনা করা তো চলবে না, আমার বাবা মা বিয়ের জন্যে তাড়া লাগিয়েছেন যে। বলেছেন, যাকে খুশি বিয়ে কর, কিন্তু বোকার মতন পছন্দ ক’রো না, আর বেশী দেরি না হয়; মাঘ মাসে আমরা তীর্থভ্রমণে বেরুবে, তার আগেই বিয়ে দিতে চাই। দেখি, তার মধ্যে কিছু করতে পারি কিনা। শোন রটাই, তুমি বড় ব্যস্তবাগীশ, তোমার দিদিমণিকে ভাব করবার জন্য খুঁচিও না যেন।
—উ রে বাবা! তা হলে আমার পিঠে দমাদম কিল মারবে।
—আমাকেও মারবে না তো?
—নাঃ, আপনাকে কিচ্ছু বলবে না।
বেড়ানো শেষ হলে রটাইকে তার বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে খগেন চলে গেল। তার পর সে প্রতিশ্রুতি রক্ষার জন্য এক মাসের মধ্যে একবার মানিকদের বাড়ি এবং তিন বার রটাইদের বাড়ি গেল। খগেন বড় মুশকিলে পড়ল, রুবির মা বার বার তাকে আসবার জন্য বলে পাঠাচ্ছেন, এদিকে রটাইএর আবদার দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। ছেলেমানুষের কথা ঠেলা যায় না, অগত্যা রটাইদের বাড়িতে খগেন ঘন ঘন যেতে লাগল।