পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৮
ধুস্তুরী মায়া

 কলিঞ্জরপতি কনকবর্মা তাঁর রাজ্যের দক্ষিণস্থ বনে মাঝে মাঝে মৃগয়া করতে যেতেন। একদিন তাঁর ইচ্ছা হল বিন্ধ্য গিরি অতিক্রম করে আরও দক্ষিণে গিয়ে শম্বর হরিণ শিকার করবেন। তিনি তাঁর প্রিয় বয়স্য কহোড়ভট্টের সঙ্গে রথে চড়ে যাত্রা করলেন, পিছনে রথী পদাতি গজারোহী অশ্বারোহী সৈন্যদল চলল।

 দৈবক্রমে ঠিক এই সময়ে বিদর্ভরাজ বিশাখসেনেরও ইচ্ছা হল বিন্ধ্য পর্বতের উত্তরবর্তী অরণ্যে গিয়ে ব্যাঘ্রভল্লুকাদি বধ করবেন। তিনি তাঁর প্রিয় বয়স্য বিড়ঙ্গদেবের সঙ্গে রথারূঢ় হয়ে যাত্রা করলেন, চতুরঙ্গসেনা পিছনে পিছনে গেল।

 বিন্ধ্যপর্বতমালা ভেদ করে একটি পথ উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে গেছে। এই পথটি বেশ প্রশস্ত, কিন্তু মাঝামাঝি এক স্থানে পূর্বোক্ত অগস্ত্যদ্বার নামক গিরিসংকট আছে, তা এত সংকীর্ণ যে দুটি রথ পাশাপাশি যেতে পারে না।

 কলিঞ্জরপতি কনকবর্মা অগস্ত্যদ্বারের উত্তর প্রান্তে এসে দেখলেন রাজা বিশাখসেন সদলবলে দক্ষিণ প্রান্তে উপস্থিত হয়েছেন। দুই রাজরথ নিকটবর্তী হলে কনকবর্মা বললেন, নমস্কার সখা বিশাখসেন, স্বাগতম্। বিদর্ভ রাজ্যের সর্বত্র কুশল তো? চতুর্বর্ণের প্রজা ও গবাদি পশু বৃদ্ধি পাচ্ছে তো? ধনধান্যের ভাণ্ডার পূর্ণ আছে তো? তোমার মহিষী আমার শ্যালিকা বিংশতিকলা ভাল আছেন তো?

 প্রতিনমস্কার করে বিশাখসেন বললেন, অহো কি সৌভাগ্য যে এই দুর্গম পথে প্রিয়সখার সঙ্গে দেখা হয়ে গেল! মহারাজ, তোমার শুভেচ্ছার প্রভাবে আমার রাজ্যের সর্বত্র কুশল। কলিঞ্জর রাজ্যের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল তো? তোমার মহিষী আমার শ্যালিকা কম্বুকঙ্কণা ভাল আছেন? সখা, এখন দয়া করে পথ ছেড়ে দাও, তোমার রথটি