পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ধুস্তুরী মায়া

বরাত খুব ভাল তাই ব্যাঙ্গমা ব্যাঙ্গমীর কথা নিজের কানে শুনেছি। আমার মনে হয় হরপাবর্তী দয়া করে পাখির রূপ ধরে আমাদের হদিস বাতলে দিয়েছেন। এই বলে উদ্ধব হাত জোড় করে বার বার কপালে ঠেকাতে লাগলেন।

 জগবন্ধু বললেন, আচ্ছা, জোয়ান না হয় হওয়া গেল, কিন্তু বাড়ির লোককে কি বলবে?

 —বাড়িতে যাব কেন। খোঁজ না পেলে সবাই মনে করবে যে মরে গেছি। আমরা অন্য নাম নিয়ে অন্য জায়গায় থাকব। তুমি জগবন্ধুর বদলে জলধর হবে, আমি উদ্ভবের বদলে উমেশ হব। কেউ চিনতে পারবে না, নিশ্চিন্ত হয়ে ফুর্তি করা যাবে।

 একাদশীর দিন তাঁরা ধুতরো ফল পেড়ে ভিতর থেকে ছোলা বার করে নিলেন। ছোলা ফুলে কুল আঁঠির মতন বড় হয়েছে। তার পর কদিন তাঁরা গোপনে নানা রকম ব্যবস্থা করে ফেললেন, যাতে ভবিষ্যতে নিজেদের আর পরিবারবর্গের কোনও অভাব না হয়। উদ্ধব উমেশ পালের নামে ব্যাঙ্কে একটা নতুন অ্যাকাউণ্ট খুলতে যাচ্ছিলেন। জগবন্ধু বললেন, যদি পরে ফিরে আসতে হয় তবে টাকাটা বার করতে পারবে না; উদ্ধব আর উমেশ পালের নামে জয়েণ্ট অ্যাকাউণ্ট কর। উদ্ধব তাই করলেন।

 চতুর্দশীর দিন জগবন্ধু বললেন, দেখ, বয়স কমাতে হয় তুমি কমাও। আমার কোনও দরকার নেই।

 উদ্ধব বললেন, তা কি হয়, এক যাত্রায় পৃথক ফল হতে পারে না। তুমি সঙ্গে না থাকলে আমি কিছুই করতে পারব না।

 —বেশ, আমি কিন্তু দিন কতক পরেই ফিরে আসব।

 —ফিরবে কেন, তোমারই তো সুবিধে বেশী। পরিবার বহ‍ুদিন গত হয়েছেন, নির্ঝঞ্চাটে আর একটি ঘরে আনবে।