পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫৬
ধুস্তুরী মায়া

কারাগারে নিক্ষেপ কর। এদের শয়নের জন্য কিছু খড় আর ভোজনের জন্য প্রত্যেককে এক সরা ছাতু আর এক ভাঁড় জল দিও।

 কহোড়ভট্ট করজোড়ে বললেন, সে কি রানী-মা, আমাদের এই পরমভট্টারক শ্রীশ্রীমহারাজ আপনার ভগ্নীপতি তো বটেনই, এখন বিদর্ভপতি হয়ে অধিকন্তু আপনার পতিও হয়েছেন। এঁকে ছাতু খাওয়াবেন কি করে? ইনি নিত্য নানা প্রকার চর্ব্য চূষ্য লেহ্য পেয় আহার করে থাকেন।

 বিংশতিকলা বললেন, তাই হবে। ওহে কোষ্ঠপাল, এই রাজমূর্খকে দু মুঠো ছোলা, এক ছড়া তেতঁতুল, একটু গুড়, আর এক ভাঁড় ঘোল দিও। ছোলা চিবুবে, তঁতুল চুষবে, গুড় চাটবে, আর ঘোলের ভাঁড়ে চুমুক দেবে।

 কোষ্ঠপাল বললেন, যথা আজ্ঞা মহাদেবী। আরক্ষিগণ, এঁদের কারাগারে নিয়ে চল।

 কনকবর্মা হতভম্ব হয়ে নীরবে কারাগৃহে গেলেন এবং ক্লান্তদেহে বিষণ্ণমনে রাত্রিযাপন করলেন। পরদিন প্রাতঃকালে তিনি বললেন, ওহে পণ্ডিতমূর্খ কহোড়, তোমাদের মন্ত্রণা শনেই আমার এই দুর্দশা হল। এই শত্রুপুরী থেকে উদ্ধার পাব কি করে?

 কহোড় বললেন, মহারাজ, ভাববেন না। আমি সারা রাত চিন্তা করে উপায় নির্ধারণ করেছি।

 দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে কনকবর্মা বললেন, তোমার উপর আর ভরসা নেই। বিশাখসেন কেমন আছেন কে জানে, তিনি হয়তো কলিঞ্জর রাজ্যে খুব সুখে আছেন।

 কহোড় বললেন, মনেও ভাববেন না তা। আমাদের মহাদেবী কম্বুকঙ্কণাও বড় কম যান না।