পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ষষ্ঠীর কৃপা

ষ্ঠীপূজোর পর সুকুমারী তার ছেলেকে পিঁড়ির ওপর শুইয়ে রেখে স্বামীকে প্রণাম করে পায়ের ধূলো নিলে। সুকুমারীর বয়স চব্বিশ, তার স্বামী গোকুল গোস্বামীর চুয়ান্ন।

 গোকুলবাবু বললেন, ইঃ, কি চমৎকার দেখাচ্ছে তোমাকে সুকু, যেন উর্বশী স্নান করে সমুদ্র থেকে উঠে এলেন!

 সুকুমারী হাত জোড় করে বললে, তোমার পায়ে পড়ি এইবার আমাকে রেহাই দাও। সাত বৎসর তোমার কাছে এসেছি, তার মধ্যে ছটি সন্তান প্রসব করেছি। পাঁচটি গেছে, একটি এখনও বেঁচে আছে। আমি আর পারি না, শরীর ভেঙে গেছে। আবার যদি পোয়াতী হই তো মরব, এই খোকাও মরবে।

 গোকুলবাবু সহাস্যে বললেন, বালাই, মরবে কেন। সন্তান জন্মায়, বাঁচে, মরে, সবই ভগবানের ইচ্ছা, অর্থাৎ পূর্বজন্মের কর্মফল। আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি তোমার ফলভোগ শেষ হয়েছে, ফাঁড়া কেটে গেছে, এখন আর কোনও ভয় নেই।

 গোকুলচন্দ্র গোস্বামী শেওড়াগাছির সবরেজিস্ট্রার। খুব আরামের চাকরি, কাজ কম, তাঁর বসতবাড়ির কাছেই কাছারি। গোকুলবাবু পণ্ডিত লোক, অনেক শাস্ত্র জানেন, বাংলা ইংরেজী নভেলও বিস্তর পড়েছেন। অবস্থা ভাল, দেবত্র সম্পত্তি আছে, বেনামে তেজারতিও করেন। সাত বৎসর পূর্বে ইনি হিমালয়ের সমস্ত তীর্থ পর্যটনের পর মানস সরোবর আর কৈলাস দর্শন করেছিলেন। ফিরে এসে ঘোষণা করলেন যে তাঁর জন্মান্তর হয়েছে, আগেকার