পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠীর কৃপা
১৬৫

কই, কারও তো সাড়া শব্দ নেই। সুকু কোথায় গো, একবার বেরিয়ে এস না।

 কেউ এল না, অগত্যা গাড়োয়ানের সাহায্যে গোকুলবাবু নিজেই তাঁর বিছানা তোরঙ্গ ইত্যাদি নামিয়ে নিয়ে ভাড়া চুকিয়ে দিলেন। তার পর—সুকু ভাল আছ তো? খোকা ভাল আছে? চিঠি লেখ নি কেন?—বলতে বলতে ঘরে ঢুকলেন।

 মিটমিটে হারিকেনের আলোয় গোকুলবাবু দেখলেন, একটি সুন্দরী মেয়ে খোকাকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রশ্ন করলেন, তুমি কে গা?

 মেনী বললে, আমার নাম মেনকা, ওঁর দূর সম্পর্কের বোন হই। খবর পেলুম সুকু-দিদির ভারী অসুখ, একলা আছেন, খোকাকে দেখবার কেউ নেই, তাই তাড়াতাড়ি চলে এলুম।

 গোকুলবাবু কৃতার্থ হয়ে বললেন, আসবে বইকি মেনকা। তা এসেছ যখন, তখন থেকেই যাও। কেমন আছে তোমার দিদি? আহা, বেহুঁশ হয়ে ঘুমুচ্ছে, জ্বরটা বেশী নাকি?

 —দিদি এইমাত্র মারা গেছেন।

 গোকুলবাবু মাথা চাপড়ে বিলাপ করতে লাগলেন—আমাকে একলাটি ফেলে কোথায় গেলে গো, খোকার কি হবে গো, ইত্যাদি। মেনী বললে, চুপ করুন জামাইবাবু, কান্নাকাটি পরে হবে। দেরি করবেন না, লোক ডাকুন, সৎকারের ব্যবস্থা করুন। গোকুলবাবু তাই করলেন।


দুদিন পরে গোকুলবাবু বললেন, ভাগ্যিস তুমি এসে পড়েছ মেনকা, তাই দুটো খেতে পাচ্ছি, ছেলেটাও বেঁচে আছে। চমৎকার মেয়ে তুমি। আমি বলি কি, এখানে এসেই যখন আমাদের