পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠীর কৃপা
১৬৯

 মেনীর সাতটা জোয়ান বেটা বাঘের মতন লাফিয়ে হুলোদশাগ্রস্ত গোকুলবাবুকে আক্রমণ করলে। তিনি ক্ষতবিক্ষত হয়ে করুণ রব করে লেংচাতে লেংচাতে পালিয়ে গেলেন।


তিন দিন পরে গোকুলচন্দ্র গোস্বামীর প্রথমা পত্নী কাত্যায়নী দেবী এই চিঠি পেলেন।—পূজনীয়া বড়দিদি, আমি আপনার অভাগিনী ছোট বোন, তৃতীয় পক্ষের সতিন মেনকা। কাল রাত্রে গোসাঁইজী আমার সঙ্গে ঝগড়া করে বিবাগী হয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। যাবার সময় পইতে ছিঁড়ে দিব্যি গেলে বলে গেছেন, আর কদাপি ফিবে আসবেন না, সংসারে তাঁর ঘেন্না ধরে গেছে। তাঁর বিষয়সম্পত্তি দেখা আমার সাধ্য নয়, অতএব আপনি পত্রপাঠ আপনার ছেলেদেব নিয়ে এখানে চলে আসুন, নিজের বিষয় দখল করুন। সুকু-দিদি একটি ছেলে রেখে গেছেন, এখন তার বয়স ন-দশ মাস হবে। খাসা ছেলে, দেখলেই আপনার মায়া হবে। আমি আর এখানে থাকব না, আপনি এলেই সব ভার আপনাকে দিয়ে আমার মায়ের কাছে চলে যাব। ইতি। সেবিকা মেনকা।

 কাত্যায়নী দেরি করলেন না, তাঁর ছেলেদের নিয়ে স্বামীর ভিটেয় ফিরে এলেন। সুকুমারীর ছেলেকে আদর কবে কোলে নিয়ে বললেন, এ আমারই ছোট খোকা।

 মেনকা আশ্চর্য মেয়ে, মোটেই লোভ নেই। কাত্যায়নী তাঁর ছোট সতিনের জন্য একটা মাসহারার ব্যবস্থা করতে চাইলেন, কিন্তু মেনকা বললে, কিচ্ছু দরকার নেই দিদি, আমার মায়ের ওখানে কোনও অভাব নেই। রাহাখরচ পর্যন্ত সে নিলে না। চলে যাবার সময় বললে, দিদি, আপনি সধবা মানুষ, কর্তার খবর পান আর না পান