পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গন্ধমাদন-বৈঠক
১৭৩

তাড়ারার জন্য রাম রাম বলে, কিন্তু তাঁর পূজা করে না, কেউ কেউ তাঁর নিন্দাও করে। সব চেয়ে দুঃখের কথা, তোমাকে তারা বিদ্রুপ করে। একনিষ্ঠ প্রভুভক্তি আর অলৌকিক বীরত্বের মহিমা বোঝবার শক্তি বাঙালীর নেই।

 —তোমার কথা কি বলেঃ

 —সে অতি কুৎসিত কথা। আমাকে বলে—ঘরভেদী বিভীষণ। জয়চাঁদ, মীরজাফর, লাভাল আর কুইসলিংএর দলে আমাকে ফেলেছে। ন্যায় আর ধর্মের জন্যই আমি ভ্রাতাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছি তা কেউ বোঝে না।

 এই সময় আর একজন সেখানে উপস্থিত হলেন। দীর্ঘ শীর্ণ মলিন দেহ, মাথায় জটা, এক মুখ দাড়িগোঁফ, পরনে চীরবাস, গায়ে কর্ষশ কম্বল। এককালে বলিষ্ঠ ও সুপুরুষ ছিলেন তা বোঝা যায়। আগন্তুক বললেন, মহাবীর হনুমান আর রাক্ষসরাজ বিভীষণের জয় হক।

 হনুমান বললেন, কে আপনি সৌম্য? ব্রাহ্মণ মনে হচ্ছে, প্রণাম করি।

 —না না প্রণাম করতে হবে না। আমি ভরদ্বাজের বংশধর দ্রোণপুত্র অশ্বত্থামা, কিন্তু ভাগ্যদোষে পতিত হয়েছি।

 হনুমান বললেন, অশ্বত্থামা নাম শুনেছি বটে। দাঁড়িয়ে রইলে কেন, বস এখানে। কোন্‌ পাপে তোমার পতন হল?

 —সে অনেক কথা। পাণ্ডবরা জঘন্য কপট উপায়ে আমার পিতাকে বধ করেছিল, তারই প্রতিশোধে আমি দ্রৌপদীর পঞ্চ পুত্র আর ধৃষ্টদ্যুন্নকে সুপ্ত অবস্থার হত্যা করেছিলাম, পাণ্ডববধূ উত্তরার গর্ভে দারুণ ব্রহ্মশির অস্ত্র নিক্ষেপ করেছিলাম। তাই কৃষ্ণ আমাকে শাপ দিয়োছলেন- নরাধম, তুমি তিন সহস্র বৎসর জনহীন দেশে