পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮০
ধুস্তুরী মায়া

করেছিলেন। কিল চড় লাথি দাঁত নখ প্রভৃতি স্বাভাবিক অস্ত্রের প্রয়োগে আপত্তির কারণ নেই।

 বিভীষণ বললেন, মহাবীর, তোমার ব্যবস্থায় একটু ত্রুটি আছে। দুই বীর সমান বলবান না হলে ধর্মযুদ্ধ হতে পারে না। মনে কর, চার্চিল আর স্তালিন, কিংবা ট্র‍ুমান আর মাও-সে-তুং, এঁরা মল্লযুদ্ধ করবেন। এঁদের দৈহিক বলের পাল্লা সমান করবে কি করে?

 হনুমান বললেন, খুব সোজা। একজন নিরপেক্ষ মধ্যস্থ থাকবেন, যে বেশী বলবান তাকে তিনি প্রথমেই যথোচিত প্রহার দেবেন, যাতে তার বল প্রতিপক্ষের সমান হয়ে যায়।

 বিভীষণ বললেন, যেমন ঘোড়দৌড়ের হ্যাণ্ডিক্যাপ।

 পরশ‍ুরাম বললেন, বৎস হনুমান, কোনও মানুষ তোমার এই বানরিক বিধান মেনে নেবে না। ব্যাসদেব নীরব রয়েছেন কেন, ঘুমিয়ে পড়লেন নাকি? ওহে ব্যাস, ওঠ ওঠ।

 পরশ‍ুরামের ঠেলায় মহর্ষি ব্যাসের ধ্যানভঙ্গ হল। তিনি বললেন, আমি আপনাদের সব কথাই শুনেছি। এখন একটু সৃষ্টিতত্ত্ব বলছি শ‍ুনুন। ভগবান স্বয়ম্ভু কারণবারি সৃষ্টি করে সপ্ত সমূদ্র পূর্ণ করলেন। কালক্রমে সেই বারিতে সর্বজীবের মূলীভূত প্রাণপঙ্ক উৎপন্ন হল, যার পাশ্চাত্ত্য নাম প্রোটোপ্লাজ়ম। কোটি বৎসর পরে তা সংহত হয়ে প্রাণকণায় পরিণত হল, এখন যাকে বলা হয় কোষ বা সেল। এই প্রাণকণাই সকল উদ‍্ভিদ আর প্রাণীর আদিরূপ। তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নেই কিন্তু চেষ্টা আছে, অন্তলীন আত্মাও আছে। আরও কোটি বৎসর পরে বহ‍ু কণার সংযোগের ফলে বিভিন্ন জীবের উদ্ভব হল, যেমন ইষ্টকের সমবায়ে অট্টালিকা। প্রাণকণার যে পৃথক প্রাণ আর আত্মা ছিল, জীবশরীরে তা সংযুক্ত হয়ে গেল। ক‍্রমশ জীবের নানা অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ইন্দ্রিয়াদি উদ্ভূত