পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৮৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
গন্ধমাদন-বৈঠক
১৮১

হল, কিন্তু বিভিন্ন অবয়বের মধ্যে বিরোধের সম্ভাবনা রইল না, কারণ সর্বশরীরব্যাপী একই প্রাণ আর আত্মা তাদের নিয়ন্তা।

 পরশ‍ুরাম বললেন, ওহে ব্যাস, তোমার ব্যাখ্যান থামাও বাপ, আমি তোমার শিষ্য নই।

 ব্যাস বললেন, দয়া করে আর একটু শুনুন। কালক্রমে জীবশ্রেষ্ঠ মানুষের উৎপত্তি হল, তারা সমাজ গঠন করলে। ইতর প্রাণীরও সমাজ আছে, কিন্তু মানবসমাজ এক অত্যাশ্চর্য ক্রমবর্ধমান পদার্থ। বিভিন্ন মানুষ কামনা করছে— আমরা সকলে যেন এক হই। এই কামনার ফলে সামাজিক প্রাণ আর সামাজিক আত্মা ধীরে ধীরে অভিব্যক্ত হচ্ছে, ব্যষ্টিগত ক্ষুদ্র স্বার্থের স্থানে সমষ্টিগত বৃহৎ স্বার্থের উপলব্ধি আসছে। কিন্তু সৃষ্টির ক্রিয়া অতি মন্থর, একত্ববোধ সম্পূর্ণ হতে বহু কাল লাগবে। তার পর আরও বহ‍ু কাল অতীত হলে বিভিন্ন মানব সমাজও একপ্রাণ একাত্মা হবে। তখন বিশ্বমানবাত্মক বিরাট পুরুষই সমস্ত সমাজ আর মানুষকে চালিত করবেন, অঙ্গে অঙ্গে যেমন যুদ্ধ হয় না সেইরূপ মাননুষে মানুষেও যুদ্ধ হবে না।

 পরশ‍ুরাম প্রশ্ন করলেন, তোমার এই সত্যযুগ কত কাল পরে আসবে?

 —বহ‍ু বহ‍ু কাল পরে। তত দিন মানবজাতির বিরোধ নিবৃত্ত হবে না, কিন্তু লোকহিতৈষী মহাত্মারা যদি অহিংসা আর মৈত্রী প্রচার করতে থাকেন তবে তাঁদের চেষ্টার ফলে ভাবী সত্যযুগ তিল তিল করে এগিয়ে আসবে। এখন আপনারা নিজ নিজ স্থানে ফিরে যান, দশ-বিশ হাজার বৎসর ধৈর্য ধরে থাকুন, তার পর আবার এখানে সমবেত হয়ে তৎকালীন অবস্থা পর্যালোচনা করবেন।

 পরশ‍ুরাম বললেন, হ‍ুঁ, খুব ধূমপান করেছ দেখছি, দশ-বিশ