পাতা:ধুস্তুরী মায়া ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দুই বুড়োর রূপকথা
১১

সেরে ফেলা যাক। বেশী রাত পর্যন্ত এখানে থাকলে মন্দিরের লোকে নানারকম প্রশ্ন করবে।

 উদ্ভব একটি গামছা পরে ঘাটের চাতালে জামা কাপড় জুতো রাখলেন। জগবন্ধুও দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেলে জলে নামবার জন্য প্রস্তুত হলেন। বন্ধুর মুখে আর নিজের মুখে তিনটি করে ছোলা পরে দিয়ে উদ্ধব বললেন, নাও, বেশ করে চিবিয়ে গিলে ফেল। এইবার মনে মনে সংকল্প কর।......হয়েছে তো?

 তার পর জগবন্ধুর হাত ধরে জলে নেমে উদ্ভব বললেন, এস, দুজনে এক সঙ্গে মন্ত্রটি বলে ডুব দেওয়া যাক।— বম মহাদেব ধুস্তুরস্বামী, দস্ত‍ুর মত প্রস্তুত আমি।

 জল থেকে উঠে গা মুছতে মুছতে জগবন্ধু প্রশ্ন করলেন, কি রকম বোধ হচ্ছে? যে অন্ধকার, তোমার চেহারা দেখা যাচ্ছে না। একটা টর্চ আনলে হত।

 উদ্ধব কাপড় পরতে পরতে বললেন, বম ভোলানাথ, কেয়া বাত কেয়া বাত! মাথায় আবার চুল গজিয়েছে হে। শরীরটা খুব হালকা হয়ে গেছে, লাফাতে ইচ্ছে করছে। দাঁতের বেদনাও নেই। ধন্য ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী! যদি ধরা দিতে তবে সোনার খাঁচায় রেখে বাদাম পেস্তা আঙুর বেদানা খাওয়াতুম। তোমার কি রকম হল হে?

 —বাঁধানো দাঁত খসে গেছে, দুপাটি নতুন দাঁত বেরিয়েছে, গায়েও জোর পেয়েছি। আলো জ্বেলে আরশিতে না দেখলে ঠিক বুঝতে পারা যাবে না।

 —চল যাওয়া যাক, কলকাতার বাস এখনও পাওয়া যাবে। বউবাজারে তরুণধাম হোটেলে ঘর খালি আছে, আমি খবর নিয়েছি এখন সেখানেই উঠব। তার পর সুবিধে মতন একটা বাড়ি নেওয়া যাবে।